আসরে কবি বন্ধুদের প্রীত ও শুভেচ্ছা রইল। এই আসরে বেশির ভাগই আমরা সৌখিন 'কবি', কেউই সবকিছু শিখে পণ্ডিত হয়ে এখানে আসিনি। কাজেই একে অপরের কাছে কিছু না কিছু শিখতে চাই।


শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-গরিমা হয়তো অনেকেরই যথেষ্ট নেইও। তাতে কিছু যায় আসে না, কবিতা লিখা বা পড়ার জন্য সেসব খুব প্রয়োজনীয় যোগ্যতাও নয়। আমরা সবাই নবিশি, কেউ প্রতিষ্ঠিত কবি নই। এখানে চেষ্টা ও চর্চা করেই একদিন হয়তো বেশ কিছু শিখে যাবো। আজ মুক্ত ব্লগের কল্যাণে কবিতার পাতায় অনেক কিছুই লিখে ফেলি, সেসব কতটা কবিতা হয় তাও জানি না তবে প্রতিদিনই কিছু না কিছু শিখছি। আমি মনে করি, এ আমার বিরাট অর্জন। সে ব্যাপারে আসরের বন্ধুদের কাছে আমি ঋণী। এই আসর আমার কাছে পাঠশালা বিশেষ, সতীর্থ বন্ধুরাই আমার শিক্ষক।


কবিতা হয়তো তেমন বুঝি না কিন্তু এটা বেশ বুঝি যে; শৈল্পিক মানের পাশাপাশি বানান ও উচ্চারণের শুদ্ধতা কবিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা যেন বিষয়টার প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দেই। কেউ আমাকে এ ব্যাপারে সহায়তা করলে খুশি হই, তাঁকে উপকারী বন্ধু হিসাবে স্মরণে রাখি। কবিতার গুণগত মান সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিলে তো কথাই নেই, এমন কি একটি বানানও যে বন্ধুর সহায়তায় সংশোধন করতে পেরেছি আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। এভাবেই না দিনে দিনে আমি পরিশীলিত হয়ে উঠছি!


আমি নিজেও অহরহ বানান ভুল করি অথচ জানামতে কোন বন্ধুর বানান ভুল দেখলে তা সংশোধনের ইঙ্গিত করি। বেশির ভাগ বন্ধুরা তাতে খুশিই হন। আসরের কবিদের মাঝে এভাবেই একটা সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে উঠে; অচেনা-অজানা হয়েও আসরে অনেকের সাথেই অনেকের নিবিড় সখ্যতাও গড়ে উঠে। দু'একদিন না দেখলে বা পোস্ট না দিলেই অনেক বন্ধু খোঁজ খবর নিতে থাকেন। এই যে আত্মীয়তা, এই যে স্বর্গীয় বন্ধন - আমি সেটা খুব উপভোগ করি। মনে হয় - কবিরা আমার পরম আত্মীয়, যেন কতকালের চেনা-জানা।


স্রষ্টার আশীর্বাদে ও এই আসরের কল্যাণে অতি অল্প সময়েই বহু কবির ব্যক্তিগত বন্ধুতে পরিগণিত হয়েছি। কবিতা যা ই লিখি না কেন, এ আমার বিশাল অর্জন। কবি-বন্ধুদের এমত প্রীতি ও ভালবাসায় ধন্য হয়ে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ গত ০৬-০১-২০১৫ তারিখে “নৈঃশব্দের ভালবাসা“ নামক এক আনন্দাশ্রু-ভেজা কবিতা লিখে পোস্ট দিই ও বন্ধুদের ব্যাপক সাড়া পাই। সে-ও ছিলো আমার বিশাল প্রাপ্তি। কবিতাটি এত অল্প সময়ে ৩২৮ বার প্রদর্শিত হয়ে ৭০টি মন্তব্যের বিশেষত্ব ধারণ করে আছে। তাও কবি-বন্ধুদের ভালবাসারই স্মারক।


আমি মনে করি, এই আসর একটি পরিবার বিশেষ। ব্যক্তিজীবনে যে যত ওজনদার বা জ্ঞানীই হই না কেন – পেশা, ধর্ম, শিক্ষা, বয়স, অভিজ্ঞতা নির্বিশেষে এখানে সবাই বন্ধু, সবাই নবিশি কবি, সৌখিন কবি। এখানে আমরা সমবেত হয়েছি কিছু মনের খোরাক অর্জন করতে, নিজের সৃষ্টিকে সমশ্রেণির সমক্ষে তুলে ধরে নিজেকে তাঁদের চোখে যাচাই করতে। একে অপরকে আনন্দ দিতে, আনন্দ নিতে। এভাবেই আমরা একে অপরের কাছ থেকে প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু শিখছি।


সুতরাং, এই পরিবারের সদস্যদের মাঝে সম্প্রীতি ও ভালবাসার বন্ধন যত গাঢ় হবে জ্ঞানে ও শুদ্ধতায় আমরা তত ঋদ্ধ হবো। কাজেই কবিতা পাঠে আমরা একে অপরকে যেন উৎসাহিত করি, সাধ্যমত সহযোগীতার মাধ্যমে কবিদের হৃদয়ান্তরে ভালবাসার সেতু গড়ে তুলি – তা ই যেন হয় কবিতা আসরের কবিদের ব্রত।


আসরের সকল বন্ধুর প্রতি রইল হার্দিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।