চৌকষ রাজপথের শুভ্র ঠিকানা হারিয়ে গেলে
নেমে যাই উঁচুনিচু আলপথে।
হাঁটার তরুণ সুখে খুঁজে পাই চনমনে সুর;
ধানি মাঠ, গেরুয়া খড়িতে চষা মুক্ত প্রান্তর,
বুক চিতিয়ে ব্যাঙ্গ করা ডুবো জলাশয়ে মাছরাঙার ডিগবাজি
নলিতার কচি পাতায় উর্মি জাগায় সমীর সন্তরণ
খাগড়ার গোড়ালীতে জেগে থাকে জড়োয়া প্রহর।

রোদেলা আকাশ ক্ষিপ্র দুপুরে ছড়ায় আধুলি সময়,
দিগন্তান্তরে দেখি ছুটে চলা বাতাসের প্রস্রবণ
এখানে ট্রাফিক নেই, লাল চোখের ইশারা নেই,
চরাচর চষে ফেরা অবাধ প্রহর মুক্তপ্রাণ বিহঙ্গম যেন,
না-লায়েক সময় পাহারা দেয় শ্যেনদৃষ্টি মেলে অতি যতনে
জীবিকার ঋণ তাই হয় না শোধ শুধুই ক্ষুৎপিপাসায়
যাপনের নানা কসরত তখনো থাকে বিস্তর দূরাগত।

কতই দেখেছি হায়; চোখ টিপে বইছে বেহায়া সময় –
নদী টিলা হাটে ঘাটে জুড়ে থাকা দুপুরের সুর
সময়ের পায়ে বাঁধা নিখিলের অদেখা নূপুর
অবয়ব ঢেকে চলা নিয়তির বিভাগী চাদর
বটের ছায়ায় নিরাপদে পাড়ি দেয় আহ্নিক-সাগর
চতুর পা্নকৌড়ি ঠোঁটে অসহায় এক মৌরলা ক্ষণ।
সে কি কোন ঘোর লাগা সুখবোধ, না যাতনার পালা?

অচেনা সময়, কিছু যায় না বোঝা এই সরোবরে
কিছু তার বোধে আসে কিছুটা হারায় যেন কোথা
ছুঁয়েও যায় না ছোঁয়া দেখেও যায় না দেখা
চেতনা বিনাশী সুর বাজে সকরুণ লয়ে।
শীতল বরিষণে যে মেঘ আনে না শ্রান্তি, বুকের পাথারে তোলে ঝড়
‘মনসুন’ কি বলা যায় তারে, না যায় প্রণয় ভাবা?
সে কি প্রেম, না শুধুই বিরহ জ্বালা?