শ্মশানের জাদুঘরে চলো;
মনের আঁজল পুরে এসো
ইতিহাস পান করি।
উত্তুঙ্গ আবেগের উচ্ছ্বসিত স্মৃতি –
স্থান পাবে কি তোমাদের ইতিহাস ঘরে?
এই মিথ্ কি বিশ্বাস হবে
দৃষ্টি ও শ্রবণে তোমার?


স্‌স্‌স্‌...(ঠোঁটে তর্জনী) সরব কলস্বরে নয়,
এসো নিভৃত চুপিসার
দেখো; তারার চাঁদোয়া টেনে হেথায় সঠান
প্রবাদের তাত্ত্বিক-পুরুষ, কী আয়েস গম্ভীরে!
রহস্য-ঘেরা তামস্যের আড়ালে
ত্রস্ত পাখিরও কূজন গিয়েছে থেমে।
হতাশা সরিয়ে খানিক বসো
ধূপশিখা কুণ্ডলীর পাশে...


ওই দেখো, ওরই পাঁজরে তৈরী
তোমাদের হাতের ষষ্টি –
দোলাও এখন দুর্বার কলা-কৌশলে!
ওরই হৃৎপিণ্ডের তাজা লহু –
কেমন কান্তি এনেছে নধরে তোমার!
ওর বিনিদ্র কুশিশ যোগান দিয়েছে
তোমার সুখ নিদ্রার জ্বালানি
আর, ভাল-মন্দের দরাদরি -
তোমায় দিয়েছে ইতিহাসে খ্যাতি।


কেউ তো জান না; ঋদ্ধগতি আজো
হোঁচট খায় না কেন?
কারণ, সে জানতো; তোমরা হাঁটতে পটু নও
তাই, বুকের রোলার ঘষে রচনা করেছে
অভ্র-পলিশ রাজপথ তোমাদের তরে।


একদা জেনেছো;
ভালবাসার আড়কাঠি ছিল না হাতে ওর:
মনের গহীন কন্দরে লুকোনো পীলসুজে
ভালোবাসার মিটিমিটি আলো পড়েনি চোখে
তোমাদের ‘ফ্লুরোসেন্টে’র বানে
জেনেছো ভুল ইতিহাস;
আলো ছিলো প্রবাদের হাতে
তোমাদের ঝলসানো চোখ সে সত্য আড়াল করেছে!
যে আনন জুড়ে দেখেছো – ঘৃণার হতাশ্য কুঞ্চন
তা-ই ছিলো প্রাণরসে ভেজা ওর
শুভ-চিন্তার নিংড়ানো শেষ নির্যাস।


রুদ্ধশ্বাসে গহীন তামস দুহাতে সরাও
বাঞ্ছনার আঁচল পেতে অলিন্দে নামাও
স্নিগ্ধ তাপস, স্নেহ-চুমোয় ভরিয়ে দাও
সদর অন্দর আর বাতায়ন ‘পরে স্থাপিত শার্শিসকল”
ঘন-নীল আকাশ অবনত হোক তোমার চোখের তারায়
আবেশে চোখ মুদে সমস্বরে বলো:


      - অরূপের কোন রূপ নেই
      - অনামিকা থাকে নামহীন
      - ভালবাসার গতি ও গন্ধ সীমাবদ্ধ।


- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -


* বিনীত কৈফিয়ত:
বড় কবিতা আমি সাইটে দিই না। তাই, বড় কবিতা পোস্ট দেয়ার জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী। ‘বাবা দিবসে’ পোষ্ট দিতেই কবিতাটি আমার ‘স্বপ্ন কাজল” গ্রন্থ থেকে উৎকলিত তাই, কাটছাট করার সুযোগ পাইনি। একজন প্রয়াত বাবার সমাধি পাশে সন্তানের উপস্থিতিতে প্রয়াত বাবার আবেগ ও না-বলা কথামালা বর্ণীত হয়েছে কবিতাটিতে...


** কবিতাটি আমার "স্বপ্ন কাজল" (পৃষ্ঠা-৭১), ২০০৯  কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।