কই গেলি গো ছেরার মা
ছেরায় কান্দে কেরে?
ছেরাডারে হাত কইরা ল’
কাজ করবি নে ফরে।


কি জানি কি খিদা ফাইছে
না-হি ভূতের ডরেই
একটু কোলে লইনছেন দেহি
আইয়াম একটু জেরেই।
আপনের ফুতে খাইতে আইব
ব’ল মাছ কিন্যা আইনছে।
হাইনয্যা বেলায় ইডা কি কাম
আপনের ছেরায় কইরছে?


হাইনয্যা কালে কেমনে কাডুম
মাছের লেজা মুড়া
এট্টু পরে তাইনে আইবাইন
নমাজ অইলে পুরা।
খাওন তানরে দে্ওন চাই
নামাজ অইলেই শেষ
আমার অহন মাথায় বারি
এবতক কারেন নিরুদ্দেশ।


আমার ছোক তো ছানী পড়া
অহন কিছুই দেখতাম না
তা না অইলে এই মাছটা
তোরে কুটবার দিতাম না।
মাছ কুটবি তো অহন তুই
কিরিছ ঘাটতে বইছছ?
রান্না-বান্না দেরি কইরা
অকাম লইয়া পড়ছছ!


লাটের ঝি গো সইবানী
অকাম দেখলাইন কই
আবুদ্যাডারে কান্দাইয়া কি
এমনি বইয়া রই?
আরহেনে যে তেল নাই এট্টু
উদার কুতাও ফাইবাইন নি?
এট্টু ফরে কারেন গেলে
আন্ধার ঘরে থাকবাইন নি?


কেডায় দিবো উদার অহন
কাম নাই ধার করনের
একটু ফরে চাঁন উঠবো নে
তহনই দিও খাওনের।


এমুন বেলায় আনছে মাছ
আমি করতাম কি
কুটবো কে মাছ বাডবো মসলা
ঘরে নাই চাকর ঝি!
আবুদ্যাডা খিদায় মরছে
তাই কানছে বাড়ে বাড়ে
আমি ছাড়া হেরে কে আর
হাত করবার পারে?


নমাজ ফইরা আইয়া মুন্সী
দিলাইন একখান হাঁক
কই গেলা গো ছেরার মা
খাওন দিয়া যাক।


এত্ত হহ্‌লে আইয়া ফরছুইন
ছালুন রইছে ছুলায়
একলা মানুষ কত ফারি
জানে না আর কুলায়।
মুন্সি কয় তাইতো বলি;
হতীন আইন্না দেই
তুমি আরাম কইরবা বইস্যা
কাজ করবো নে হে-ই।
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
বাংলাদেশের একটা বৃহৎ অংশের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত কবিতাটা আসরের কবি অরূপ গোস্বামীকে উৎসর্গ করছি। উল্লেখ্য, ঐ এলাকার কথ্য ভাষায় ‘ড়’ এবং ‘প’ বর্ণ দুটির ব্যবহার নেই বললেই চলে। কবির কাছে প্রশ্ন: আপনি বরাবরই আঞ্চলিক ভাষায় সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখেন কিন্তু এই ভাষাটির কত শতাংশ কথা আপনার বোধগম্য হয়েছে?