আলোচনা সভায় কবি কবীর হুমায়ূনের লেখনীর মাধ্যমে ঢাকা সাহিত্য মেলা (Dhakalitfest) ও বাংলা একাডেমি চত্তরে কবি নির্মলেন্দু গুণের সাথে বাংলা-কবিতা আসরের বন্ধুদের আড্ডার বিষয়ে জানতে পারলাম। বড় আফসোস হচ্ছে যে, এ সময়টায় আমি ঢাকায় ছিলাম না। বাংলা-কবিতা আসরের অংশগ্রহণকারী বন্ধুদের জন্যে এই এক দুর্লভ পাওয়া। অংশগ্রহণকারী বন্ধুদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই।


আমাদের এডমিন আশফাকুর রহমান পল্লবের মহানুভবতায় মুগ্ধ হলাম সবচে' বেশি। মেলার এই আড্ডায় কবি নির্মলেন্দু গুণের প্রকল্প ‘কবিতা কুঞ্জে’র জন্যে ত্রিশ হাজার টাকা প্রদান করেছেন। কবিতা পাগল একটি মানুষ কতটা কাব্যপ্রেমী হলে সুদূর প্রবাসে থেকেও দেশ ভাষা এবং কবিতাকে ভালোবেসে কবিতার জন্যে একটার পর একটা উদ্যোগ নিচ্ছেন।


নিজেও তিনি ভালো কবিতা লিখেন কিন্তু প্রকাশের ব্যাকুলতা নেই। একজন আপাদমস্তক কবি এই মানুষটি গুণী কবিদের বরাবর সম্মান করেন। এই কয়েকদিন আগেই - ০১ নভেম্বর, ২০১৬। কবি আমার কাছে কবি হেলাল হাফিজ ও কবি নির্মলেন্দু গুণের যোগাযোগ নম্বর জানতে চাইলেন - তাঁদের লেখা কবিতা পাতায় আপলোড করার অনুমতি নিতে হবে। এরই মধ্যে যথারীতি কবি নির্মলেন্দু গুণের ২৩টি কবিতা খ্যাতিমান কবিদের পাতায় আপলোড হয়েও গেছে, আরো হচ্ছে। হেলাল হাফিজ সহ অপরাপর খ্যাতিমান কবিদের কবিতাও সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে।


সত্যি তিনি ‘পাগল কবি’ বটে! ঘরে-বাইরে দুজনই কাব্যপ্রেমী। ভাষা ও কবিতার প্রতি কবি দম্পতির যে কত টান! কথায় কথায় সে কাহিনী জানতে পারলাম; আগে তিনি অপর একটি কবিতার সাইটে লিখতেন (সেখানে আমিও লিখতাম)। সেই সাইটের নানান ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতার বিষয়াদি ভাবতে ভাবতে নিজেই একটি ভাল ও পূর্ণাঙ্গ সাইট করার কথা ভাবতে থাকেন। জানা হল; শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর অনুপ্রেষণায় কী করে তিনি বাংলা-কবিতার মত একটি সাইট আমাদের উপহার দিতে পেরেছেন!


শিক্ষাসেবী অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাবার কৃতি সন্তান সদালাপী সজ্জন ব্যক্তি আমাদের এডমিন আশফাকুর রহমান পল্লব। শিক্ষানুরাগী অধ্যক্ষ বাবার আদর্শ ও প্রেরণা মনেপ্রাণে পোষণ করেন। পঁচাত্তোর বছর বয়স্ক বাবাও বেশ সদালাপী সপ্রতিভ মানুষ। তাঁর সাথে আলাপে সময় ভুলে যেতে হয়। এভাবেই তিনি শ্রোতাকে মুগ্ধ করে রাখেন তাঁর বাক-কারিশমায়। তিনি আমার প্রাক্তন শিক্ষকও বটে। উপরন্তু তিনি আমার চাচার বন্ধু সুবাদে আমাদের বাড়িও তাঁর যাতায়াত ছিল।


কবি পল্লব ইতোমধ্যে নিজ খরচে বিভিন্ন প্রকাশনার ব্যবস্থাও করছেন। আরো প্রকাশনার উদ্যোগ রয়েছে তাঁর। সময় সুযোগ হলে অচিরেই নতুন প্রকাশনায় হাত দিবেন। ব্যক্তিগত খাত থেকে দান করলেও টাকাটা তিনি বাংলা-কবিতার নামেই দেন। কবি নির্মলেন্দু গুণের প্রকল্প ‘কবিতা কুঞ্জে’র জন্যে তাঁর এই অনুদানে নিজের পাশাপাশি বাংলা-কবিতা আসরের গৌরবও বেড়েছে। আলাপচারিতায় আরো জানালেন; কবিতা-পাতার আরো অনেক উন্নয়নের পরিকল্পনার কথা। আরো প্রকাশনায় হাত দেয়ায় তাঁর উদ্যোগের কথা, বাংলা-কবিতা আসরের কবিদের আরো উৎসাহীত করে কবিতায় সম্পৃক্তকরণের নানান উদ্যোগের কথাও।


একদিকে বাংলা-কবিতা আসরের মত সাইট পেয়ে নবীন লেখিয়েরা যেমন উপকৃত তেমনি আশফাকুর রহমান পল্লবের মত একজন নিবেদিত এডমিন পেয়ে আমরা গর্বিত। মাননীয় এডমিন ও বাংলা-কবিতার উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি।