আমার বয়স বেড়ে যাচ্ছে সরোজিনী,  তুমি জানো? ঘুমাতে যাবার আগে ছোট্টটি থাকি, আর উঠে দেখি বড় হয়ে গেছি ঢের। আমি কি তাহলে রিপ ভ্যান উইংকলের মতো ঘুমাই?
তুমি ভাবতে থাকো, কেননা অনন্ত শূন্যের মতো  তোমার বয়সের তো কোন গাছপাথর নেই। আর ফুরিয়ে যাওয়ারও কোন বালা নেই। আমার আছে। ফুরিয়ে যাওয়ার ভয় নিয়েই পা ফেলি, থামি, আবার এগোই। কি করে সময়ের খাকি হিসাবনিকাশের বাইরে চলে গেল  তোমার জীবন? কেন তোমার সাথে একই সমান্তরালে আমি বেঁচে থাকছি না ... কেন নির্দয়ের মতো যাবতীয় ভারি ভারি সময় আমার দিকে ধেয়ে আসছে?
এই ভারসাম্যহীন,  স্বল্পমেয়াদি, অনিচ্ছুক ভ্রমণ সামনে চলে আসলেই আমার গালিবের কবিতা মনে পড়ে।


প্রতীক্ষাই আমার জীবন
তোমাকে আমি ছুঁতে পারি না
এই জীবন যদি আরও দীর্ঘতর হতো
তবে তাও হতো ব্যথাতুর প্রতীক্ষার জীবন...


তোমাকে সবুজটি রেখে স্বার্থপরের মতো আমি বাদামী হয়ে উঠছি দিনকে দিন। তারাখসা দেখতে তোমার নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগতো। হাওয়ার অন্তহীন মই বেয়ে কোথায় চলে গেলে? আকাশগঙ্গার কোথাও যদি ডাকঘর থাকে, তবে খসে পড়া তারাদের কাছে খবর পাঠিও। সরোজিনী, তোমাকে আমার এক অধিবর্ষ ঈর্ষা।
আমার বয়স বাড়ে, সরোজিনী তোমার বাড়ে না।