একদিন জাহাজের প্রপেলার আর মাস্তুলের দেখা হয়ে গেল। পরস্পরের কাছ থেকে তারা সমুদ্রের তলদেশের বিবিধ গল্প এবং আকাশের সীমানাহীন ঔদার্য নিয়ে বিশদ বর্ননা শুনলো।
তৎক্ষণাৎ মাস্তুল  বিনীত অনুরোধ জানিয়ে প্রপেলারকে বললো  জাহাজটাকে ডুবিয়ে দিতে। তলদেশের দৃশ্য সে মাথায় করে রাখতে চায়। আর প্রপেলার ইচ্ছা রাখলো, সমুদ্রের ভারী জলে ক্রমাগত  চড়কি খেয়ে সে ক্লান্ত, তাই সে একটা হাওয়াকলের মতো বাতাসে অনিয়মিত ছন্দে দুলে দুলে উঠতে চায়। জায়গা বদলের জন্য দুজনেই মরিয়া।
কিন্তু তাহলে তো জাহাজ পুরোটা ডুবিয়ে দেওয়া যাবে না। শেষতক ঠিক হলো, পুরোটা ডুবিয়ে কেবল মাস্তুলের জায়গাটা ভাসিয়ে রাখলেই হবে, প্রপেলার সেখানেই ঘুরপাক খাবে আর নোনা বাতাস গায়ে মাখবে।
ওদিকে মাস্তুলের যেহেতু আকাশের অনেকটা জানা, তাই সে জলেরও গভীরে যেতে চাইলো। নোঙরের সাথে গোপনে ফন্দি এঁটে প্রপেলারের কথা না রেখে জাহাজের পুরোটাই ডুবিয়ে দিলো। সমুদ্রের তলদেশে ডুবে ডুবে থাকা শ্যাওলাজমা জাহাজের প্রপেলারগুলো আজও বিষণ্ণ মাস্তুলরূপে  কেমন মৃদু মৃদু দোলে।
জীবিত কিংবা মৃত জাহাজের মাস্তুলই তো প্রকৃত অভিবাবক।