হে কোকিলগন্ধী রক্তিম ভোর
পরিযায়ী নীলাভ পাখির দল
স্বপ্নচারী মায়ামৃগ
হে কস্তুরি আভার চন্দ্রিমা
অন্তঃসলীলা ফল্গুধারা........
কতজনের কাছে একটা কবিতা
ভিক্ষা করেছি,
একটা কবিতার জন্য
মাথাখুঁড়ে মরেছি !


কে বলেছে কবিতা আবেগের নিরলস প্রকাশ !
কবির মায়াকুসুমের সুপ্তি !
শাদা পাতায় চোখের জলের জোয়ার !
বাঁধনহীন হৃদয়জ অভিব্যক্তি !
কবির মৌনশান্তির সমাধি !
কবিতা মানে তো অসহায়তা.......
বিনিদ্র অতৃপ্তি.....
শেষ রাতের প্রসব যন্ত্রণা.....
রানী মৌমাছির লজ্জায় কর্ণমূল লাল হওয়া....
কাব্যিক অসম্পূর্নতাকে অগ্নিভ আঁচে সমর্পণ করা.....
কবিতা মানে নৌকাডুবি.....
কবিতা মানে আয়ুক্ষয়.....
দিগন্তের কাছে লোলুপ শব্দভিক্ষা.....


তবুও একটা কবিতা লিখতেই হবে
বিতশোক নির্বাণের আগে
যেখানে বীঠোফেনের চন্দ্রিল সোনাটার
সিম্ফনি থাকবে না
ভিয়েনার সপ্নীল সূর্যোদয় থাকবে না
রুমীর মরুমুগ্ধ মাদকতা থাকবে না
উজ্জয়নীর মহাকাল মন্দিরের মতো
স্নিগ্ধতা থাকবে না
অজন্তার উদোম নারীর বুকের মতো
অভ্রভেদী আকুলতা থাকবে না......


সে কবিতার শরীর গড়ে উঠবে
হরপ্পার অন্ধকার কুচি কুচি করে
কেটে নিয়ে আসা আধলা অক্ষর  দিয়ে,
অংকোর্ভাটের আকাশে সন্ধ্যাতারা নামলে
ডুবে যাবে বরফ জ্বরে,
ঝড়ের রাত্রে কেঁদে ভাসাবে,
সালঙ্কারা হবে ময়ূরীমুদ্রায় দাঁড়ান মৃত্যুর মতো,
শিশিরের শব্দের মতো,
কবি মরে গেলে কবিতা গলে যাবে
মোমের মতো,অরণ্য বিষাদে.....
কবির শেষ চিহ্ন হলুদ অস্থি
রূপে মিলিয়ে যাবে
নিসর্গ স্মৃতির অনন্ত  দ্বীপে.....