কত ডাকি মাগো তোমায়
চক্ষু মুদে কখন থেকে-
চুপটি করে আছো শুয়ে
ঘরের কোণের ওই আঙিনায়।
ষষ্টি মেসো বলল মোরে
তুমি নাকি অনেক দূরে,
আমাকে আর বোনকে ছেড়ে
ওই আকাশের তাঁরা হয়ে
তাকিয়ে আছো মোদের তরে।
চাইনা আমি সেই তাঁরা, মা,
এস না আবার গল্প করি
তুমি আমি সবাই মিলে।


মাগো তুমি চাও না পানে,
রাঙা তোমার লাল পায়ে তে
কাঁদছি আমি বুক ফাটিয়ে।
দাও না গো মা সাড়া আমায়
যেমন দিয়ে বলতে তুমি
খোকা আমার – আয় কোলে আয়।
মাগো  আমি ডাকছি তোমায়,
সকাল থেকে খিদে র পেটে
বোন টা আমার উঠছে কেঁদে,
এক বার টি চোখ টি খুলে
আদর করে নাও না বুকে।


মাগো এবার চোখ টি খোলো
আকাশ  প্রাণে দেখো চেয়ে
সূর্য গেছে অস্তাচল  
সন্ধ্যা ঘনায় নিশা চরে,
মাগো তুমি বল্লেনাতো
ভয় পাস না খোকা খুকু
আছি আমি তোদের সাথে।
বেলা যে মা বয়ে গেল,
রান্না ঘরে চুপটি মেরে
মিনি দেখো গেল ঘুরে।
আরেকটি বার এসো না উঠে,
বোন টা আমার খিদে র তরে
চোখের জলে, কান্না গিলে
ঘুমিয়ে আছে চুপটি করে।


মাগো –এরা বলছে আমায়,
উঠবে নাকি আমার কাঁধে
পারবো না মা, সত্যি বলি
তোমায় ছেড়ে কোথায় চলি।
এরা কি মা সত্যি বলে ?
খোকা বলে ডাকবে না যে
কোথায় গেলে , ফানুস হয়ে,
ঘুমিয়ে থাকো চিরতরে।


মাগো বলো থামতে এবার
ছোট্ট কাঁধে, বড্ড যে ভার।
মনটা আমার ঘরের কোনে
আবছা আলোয় তোমায় ঘিরে,
তাকিয়ে আছে সন্ধ্যা রাতে
শুনবো কখন শাঁখে র আওয়াজ
জ্বলবে আবার প্রদীপ রাতে।
চেয়ে দেখো মাগো তোমার
শূন্য বুকে দেখছি এবার
সন্ধ্যা তলার প্রদীপ আলো,
তোমার মধুর শাঁখে র আওয়াজ
কোথায় যেন হারিয়ে গেল
জ্বলছে না আর সন্ধ্যা আলো।


মাগো তুমি কোথায় এলে
পথ যে ফুরায় গেছে চলে,
শেষ বেলা টা ঘনিয়ে এলো
এবার তুমি দেখ চেয়ে,
তোমার মাথা আমার কোলে।
মাগো আমার, চির বিদায়
দাঁড়িয়ে আছি, বুক ফেটে যায়।
একটি বার দেখো চেয়ে
ছেলে তোমার চুপটি করে
দাঁড়ায় আছে কেমন করে।
গনগনে আঁচ , নিভছে আঁধার
খুলল বাঁধন, জ্বলবে এবার।
মাগো আমার ,এই শেষ বার
ভালবেসে বলো না আবার
খোকা খুকি আসবো আবার।


বললে না মা , চলে গেলে।
নীল আকাশের তাঁরাই হয়ে
খুঁজবো আবার তারার মাঝে,
সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালবো সাঁঝে।
মাগো আমি থাকবো চেয়ে
দূর গগনে তোমার পানে
অশ্রু ভেজা চক্ষু নিয়ে।
দেখতে যদি পাও গো আমায়
বলবে খোকা, বলবে খুকি
ভয় কিরে তোর,
এই তো আমি
চোখ বুজে দেখ-
বুকের ভিতর।