----------সেদিনের সেই ভোর---------
*****************************
জেলেরা জোড়া নৌকা ভাসিয়ে, ভাসাজাল  ছড়িয়ে,  
আধ ফালি বাঁশের হাত বৈঠার কেরামতিতে --
ডোঙার  দু – কানায়  ঠক্ঠক্   ঠক্ঠক্   --
জলের উপর ঠাস- শব্দে মাছ ধরত ।
সুমধুর ঐ হৃদি  সুখকর ধ্বনি শুনে -  
আমার ঘুম ভাঙত রোজ ।  
তারপর  লেপের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসত-
চোখ, কান, মুখ সঙ্গে ঐকান্তিক ইচ্ছা ও একগ্রতাও।
ছোন দিয়ে ছাওয়া ঘরের  চালার পানে--
অপলক মন হারাতো ‘অমর পালের’ প্রভাতী গানে।  
খাল পাড়ার গোসাঁই দাদু –
মাথায় , কানে সাদা কাপড়ের ফেটি,  
গায়ে খদ্দরের চাদর জড়িয়ে,  
ডান হাতের কনুইতে কেরোসিনের লণ্ঠন,  
বাম কাঁধে ঝোলা ঝুলিয়ে,  
করতাল বাজিয়ে মন হরণ সুরে গেয়ে যেতো –
"জাগিয়া….. লহ কৃষ্ণ নাম….. রে নগর বাসি…. ,  
জাগিয়া…… লহ কৃষ্ণ নাম… ।"
ক্রমশ বাড়ি থেকে বাড়ি, পাড়ার শেষে –
ক্ষীণ হতে হতে বিলীন হত সুর,  
মনে হতো আর একটু যদি শোনা যেতো।  
সেদিনের সেই ভোর আর আসে না  ।


শিউলি তলায় শিউলি রাশি ;
আর নদীর ধারে বুড়ো শিমুলের হাসিতে,  
নদীর ওপারে লাল মুখে হেসে উঠত সূর্য-সকাল।  
নৌকার কোল ভরা মাছে,  
শান্ত ‘পলদা’ নদীর ধোঁয়া চিরে,  
জেলেরা ক্লান্তি সুখ নিয়ে ঘরে ফিরত।  
সেই সকালও আর….. আসে না!


## পলাশ বিশ্বাস