বুকের মধ্যে আজকাল একটা সুর বাজে, অচেনা সুর। আবার বাম বুকে ঠিক দুধের নীচে হঠাত টের পাই মোবাইলের ভাইব্রেশন। তড়িঘোড়ি মোবাইলটাতে হাত দিতে চাই। দেখি, না- বোবাইল নেই বুক পকেটে। কিছু শার্টের বুক পকেতও নেই। সে কারনে নয়, আমি এমনিতেই বুক পকেটে মোবাইল রাখি না কখনও। দেখতে খারাপ লাগে তা নয়। সচেতন হিসেবেই রাখি না উপদ্রুত মোবাইল ভাইব্রেশনের দুষ্টু প্রভাব এড়ানোর জন্যই।  


বছরের শেষ দিনটিতে এসে এমন সব ভাবছি কেন! আসলে হঠাত মনে হল এ বছরটা বেঁচে থেকে পার করে দিলাম তাহলে?  কিন্তু কি পেলাম, কি দিলাম, কি হারালাম, কি বাকি রয়ে গেল যা অনেক করে পেতে চাই এ জীবনে। হিসেব করে দেখতে বড্ড কষ্ট হোচ্ছে। দেখি হারানোর ফর্দটাই বেশী হয়ে যায়। এ কি শুধু আমার বেলাতেই নাকি সকলেরই তাই হয়। জানি না, তবে অচেনা সুরের মুর্ছনা আবেশিত করছে যেন বেঁচে থাকা দিন রাত।  


আকাশ ভেংগে আছে, মেঘেদের ডানা ভেংগেছে, সূর্যের আলোরা নাকি বাঁকা পথে চলছে। আলোর বাঁকা পথ মানেই তো অন্ধকার। অন্ধকারও আজকাল বছরের শেষে দেখি উপহাস করছে। বাতাস কখনও কখনও শুন্য হচ্ছে। এমন শুন্যতা ধরা দিলেই কেবল বুঝা যায় নাকি নিজের প্রানের বাতাস কি শূণ্যতায় লুকোচুরি খেলছে বুকের ভেতর। তাহলে অচেনা সুর কি তারই রেশ, তারই ভাইব্রেশন। কি জানি এ কেমন অন্ধকার!


কত করেই তো বললাম একটা ফুলের মৃত্যুতে আহত হোই আমি, আমার হাতে অস্ত্র দিও না। কত করেই তো বললাম আমি মৃত্যুকে আমার ভীষণ ভয়, আমাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে আবার তা কেড়ে নিও না। কত করেই তো বললাম আমি মিথ্যা কথা বলতে পারি না, আমায় কাঠগোড়ায় দাঁড় করাতে হবে না। এতটা বছর পেরিয়ে আবার একটি বছরের শষ দিনটি এলো তবুও তোমাকে চেনানো গেল না এই আমাকে । এও যে হারানোরই ফর্দ!


জানি না আগামি বসন্তে দেখা হবে কি না, জানি না তুমি যে ভাবে আমাকে পেতে চাও সে ভাবে আমি তোমার হয়ে রইব কি না, জানি না যে শিশুর জন্য আজ এতো মায়া সে শিশু আমাকে কোন দিন বড় হয়ে খুঁজবে কি না, জানি না যে অভিমান আর অনুযোগ বুকের মধ্যে বিগত বছরে জমে রইল তা আগামী বছরে মিলিয়ে যাবে কি না। জানি না যে ভালোবাসা আমি দিয়েছিলাম তোমাকে তুমি তা আজও সত্য বলে মেনে নিবে কি না! মেনে নিবে কি না আসলেই আমি বড্ড ভালোবাসি তোমাকে।


৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯।