মাছের লেজের দোলায় অথবা মাছরাঙার শিকারী পাখার ঝাপটায় দিঘির জলে ঢেউ খেলে যায়। গাছের ছায়ারা, মুক্ত আকাশ, কখনও সূর্য অথবা মেঘ সে জলের গভীরে কেঁপে কেঁপে উঠে। আমি চেয়ে থাকি বহুক্ষন। কি যে খুঁজি ঘাটের পাটাতনে বসে অপলক দৃষ্টিতে ওই দিধির জলে নিজেও বুঝি না।


তবে সবুজ শ্যাওলার সাথে ভাসে শীতের হাওয়ায় ঝরে পড়া গাছের পাতারা। দেখি জলে এলোমেলো হাওয়ায় শ্যাওলাদল একত্র হয়, কখনও ভাংগে, কখনও এ পাড় থেকে ও পাড়ের কোল ঘেঁষে পড়ে থাকে। নিজেকে ঐ ঝরে পড়া পাতাদের সাথে একটি পাতা ভাবতে ইচ্ছে করে।


কেন এমন ইচ্ছে হয়? তোমার মুখ কি দেখা যায়, তোমার চোখের জল কি টের পাই, তোমার দোলা, খোলা হাওয়ায় তোমার আদর কি ভেসে বেড়ায়, তোমার নগ্ন পা জোড়া কি জলের ঘাটে টের পাই? আমি ভাবি ঝরা সেই পাতা যদি জলের ঢেউয়ে ভেসে ভেসে তোমার জল ছবির ছায়ায় গিয়ে ঠেকত, তাহলে কি আদরে আলিঙ্গণ করতে তুমি?


জানি শীত ফিরে গিয়ে বর্ষা আবার ফিরে ফিরে আসবে। শাখায় গজাবে নতুন পাতা, অলক্ষ্যেই বড় হবে কদম গাছের ডাল, নিম গাছের কান্ড। পাতারা ভাসতে ভাসতে ডুবেও যাবে একদিন। কিন্তু ভালোবাসার চোখের জলে কি ডুববে তোমার জলজ কল্পনার ছবি, ডুববে কি- না পাওয়ার কষ্ট মেঘ, ডুববে কি দূরে থাকা বিরহী ক্ষন? বরং দিঘির জলে চোখ পড়লেই তুমি যে না ডুবে ভেসেই বেড়াও আমার দৃষ্টি সীমায়।


০৯ ফেব্রুয়ারী,  ২০২১।