ইদানিং বড্ড ঘুম পাচ্ছে আমার। দিনেই অফিসের ব্যস্ত টেবিলে প্রায় তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছি। চোখের ঘুম এখন যেন চোখ থেকে শরীরে, মনে থেকে মননেও জেঁকে বসতে চাইছে। অথচ ছোটবেলার মত কোন হোম ওয়ার্ক নেই, সারা  দুপুর মাথায় করে নেই খেলার মাঠকে চঞ্চল পায়ে দলা, তারপর ক্লান্ত সন্ধ্যায় কামলা ঘুমে অস্থির হওয়া, নেই পেটের আয়োজন না বুঝেই চোখের ক্ষুধায় অতিরিক্ত খাওয়া, তার পর ঘুমে অস্থির হওয়া, পেট ফেঁপে মুখ ভর্তি বমির পর  ক্লান্ত শরীরে আরও অবসন্ন হওয়া।


বরং এখন খাওয়া গেছে কমে, ফাঁপা পেটে জায়গা করেছে অম্ল পেপটিক গ্যাস, পায়ের চঞ্চলতায় বিগত সেই মাঠের আয়তন ছোট হতে হতে এসে আশ্রয় নিয়েছে অনিয়মিত রানিং ট্রেডমিলে, হোম ওয়ার্ক এসে আবদ্ধ হয়েছে সকালের   কাঁচা বাজারের ফর্দে, বেড রুমের বিছানা অলস পড়ে থাকে কোল খালি করে, আর দু’হাত বাড়িয়ে ডাকে ওর বুকে নিঃশ্চিন্ত নিরাপদ ঘুমের জন্য। কোন শাসন নেই, কোন বারন নেই, কোন অসুখ নেই তবু ঘুম আসে না। কাউকে ভালবাসলে অথবা ভালবাসায় পড়লে নাকি এমন ঘুমহারা হয় চোখ।


লজ্জার মাথাটাথা খেয়ে অফিসের টেবিলেই প্রায়ই এখন ঢুলছি। অথচ সকলে যে ভাবে মুখরোচক গল্প রটিয়ে বেড়াচ্ছে,  তাতে আমি নাকি কারও প্রেমে পড়েছি, কোন সুন্দরি রমনীর সাথে চটিয়ে প্রেমট্রেম করছি। এখানে সেখানে দিন রাত ঘুরে বেড়াচ্ছি। পেট খারাপ হয়না এখন, এখন নাকি আমার চোখ খারাপ হয়েছে, খারাপ হয়েছে আমার পাড়াতো সম্পর্ক। তাহলে আমার ঘুম পাচ্ছে কেন? তেমনটি হলে তো আমার জেগে থাকার কথা, ঘুমের সাথে চির শত্রুতায় হওয়ার কথা কেনি আংগুল ছোঁয়া আড়ি! অথচ আমার বড্ড ঘুম পাচ্ছে ইদানিং।


নাকি- আমি প্রেমট্রেমেরও ঊর্ধ্যে কোন নির্ভারতায় সময়ের মরমী কোলে ঝিমুচ্ছি অথবা ঘুমোচ্ছি পরম শান্তিতে  দিনরাত।