জুতো খুলে স্পঞ্জের স্যান্ডেল পরি। অফিসের লেবাস খুলে
ভাবি মাগরিবের ওয়াক্ত, এই মাত্র মাইকে আযান হল, নামাজ
পড়তে হবে। মাস্ক খুলতে খুলতে ভাবি আমি এখন যেন ভিন্ন
এক পৃথিবীর মানুষ। আরাম নয়, তবুও নামাজটাই কেন জানি
আজকাল ভালো লাগছে, আবার ভালোও লাগছে না!  


ওজুর পানি গড়িয়ে যায়, ট্যাপের পানি ঝরে যায়, আযান শেষ
হয়ে নামাজের ওয়াক্ত যায় যায় প্রায়। দেখি জানালায় সন্ধ্যা আলো
কেমন ম্লান হয়ে আছে। জানালার কপাট খোলা। কি জানি
কতগুলো মশা আজ সহজেই অবস্থান নিল সন্ধ্যা ঘরে।


আমি তো এখন এক ভিন্ন পৃথিবীর মানুষ। আমাকে এখন হয়ত
প্রতিদিনের সকাল চোখ মেলে দেখে, দুপুর চোখ মেলে দেখে,
এখন সন্ধ্যা দেখছে। সান্ধ্য চড়ুুই আর বুলবুলিটাও উঁকি দিয়ে
গেছে। কি ভাবে ওরা আমাকে নিয়ে ইদানিং? ওরা কি মনে
রেখেছে আমার আরাধনার শহর,  বিগত প্রাত্যহিক জীবন?  


সেদিন দেখি একটা সকাল, একটা দুপুর কেমন থমকে দাঁড়িয়ে
আছে। আজ যেমন সন্ধ্যাটা। সন্ধ্যার নামাজ আদায় হয়। রাতেরটাও।
কিন্তু সকালের নামাজ কাজা হয়। দুপুরের নামাজে কেমন চার
রাকায়াত সুন্নত কম পড়ি। আমাকে কেউ ক্ষমা করবে না। তবে
বিশ্বাস সৃষ্টিকর্তা ক্ষমা করবেনই। আর আসর? সে তো মনে আছর
করেই থাকে সময়ের আলিংগনে ভিন্ন পৃথিবীর সত্তাতেও।


আজকাল এই ভিন্ন পৃথিবীতেও একটা পরিচিত সংগীত বেজেই চলে।
সে সংগীতের কথা দুঃখ নয় প্রেম নির্ভর, সে সংগীতের লয় খেমটা নয়
মিষ্টি ঢীমা, সে সংগীত উগ্র নয় শান্ত। কোথায় যেন একটা টানাটানি
কানাকানি চলে মন আর মননে। অদৃশ্য কেউ পাহারায় রাখে প্রতিদিন।
আমি তো এখন এক ভিন্ন পৃথিবীর মানুষ, মাস্ক কি আমায় ফিরিয়ে
দিবে বিগত জানাশোনা, প্রেম আর প্রনোদনা?    


১১ আগষ্ট, ২০২০।