করোনা আজ অনাকাংখিত মৃত্যুকেই শুধু উসকে দেয়নি।
সে তো অন্তরালে আবডালে বিশ্বাসও নিয়েছে কেড়ে।
তাইত তুমি আজকাল আমার বুকে মুখ গুঁজে ভালোবাসার
কথা বলা তো দূরে থাক আমাকে তুমি ছুঁয়েও দেখতে চাইছ না।
কারন তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে পারছ না। আমিও কি
তোমাকে বিশ্বাস করতে পারছি?


আমার হাত তোমার হাতে না নিতে পারলে, আমার আংগুল
তোমার আঙ্গুলে খেলা না করলে, আমার চোখ, চোখের ভাষা,
আমার ঠোঁট, ঠোঁটের কাঁপন, আমার নাক, নাকের ঘাম ছিল
তোমার বড্ড আদরের। তাকে ছুঁয়ে না দিতে পারলে,
তাকে আদর করে দিতে না পারলে তুমি বড্ড কাতর হতে।
অথচ কেমন ইতস্তঃতায় থাকছ দূরে!


আমিও কি পারছি? কেমন অস্বস্থিতে থাকতে হচ্ছে তোমার সামনে।
মনে হচ্ছে অনেক অচেনা। তোমাকে কোনকালে ছুঁয়ে দেখেছিলাম
বলে মনে পড়লেও শরীরে আড়ষ্ঠতা, ভয়ংকর জড়তা। করোনা কেমন
পর করে দিয়েছে ভালোবাসার মানুষগুলোকে। আমি যে
কোয়ারেন্টাইনের আগেই আমার হাত, পা, শরীর, চোখ, নাক আর
ঠোঁটের কাছে আইসোলেশনে একাকিত্বের জীবন কাটাতে শুরু করেছি।


অথচ বসন্ত এখনও তার আবেগী গন্ধ রুপ ছড়িয়ে ডাকছে প্রতিদিন
সদ্য সবুজ কচিপাতার বাগানে। দু’দন্ড বসে তোমায় নিয়ে খুসুঁটিতে
মাতামাতি করতে, তোমার চুলে ফুল গুঁজে দিতে।  বসন্তের কোকিল
এখনও পাতার ফাঁকে বসে উঁকি দিচ্ছে কন্ঠে সুর তুলতে।
কিন্তু আমার সাথে মিশবে কি মিশবে না, আমাকে ছুঁয়ে দেখবে কি
দেখবে না সে বিশ্বাস আজ হোঁচট খাচ্ছে। তাতে দ্বীধা থাকলেও মনে
প্রশান্তি জাগছে ছুঁতে হল না বলে।


এমন বিশ্বাসহীনতায়  কি আর ভালোবাসার কবিতা লিখা যায়?
তাইত করোনার থেকে মুক্তি পেতে চাই। মুক্তি পেতে চাই অবিশ্বাসের
অস্বস্তি থেকে। মুক্তি পেতে চাই তোমাকে ছুঁয়ে না দেখার কষ্ট থেকে।
মুক্তি পেতে চাই ভালবাসার কবিতা না লিখতে পারার যন্ত্রনা থেকে।


২৩ মার্চ, ২০২০।