আমি যখন মাটিতে বসে তোকে লিখছি
তুই তখন সুনীল আকাশের অনেক গভীরে ভাসমান।
আমি যখন ভাবছি তুইও তখন ভাবছিস।
আমাকে নিয়ে ভাবছিস নাকি মেঘ নিয়ে, তন্দ্রা নিয়ে
না বাইরের আলো নিয়ে,
খাবার নিয়ে নাকি ঠান্ডা পরিবেশ নিয়ে,
তা বলতে না পারলেও
তুই একটা কিছু নিয়ে যে ভাবছিস এটা তো ঠিক।


আচ্ছা বসার সীট বেল্টটা কি খোলা এখন?
তারপরও কি তোর বসতে অসুবিধা হচ্ছে!
কেউ লম্বা তাই তার পা লম্বা বা খাটো বলে
তার পা খাটো তা নিয়ে ভাবনার বিষয় না।
আজকাল বসার জায়গাই হয়ে গেছে আঁটোসাঁটো,
কারন একটা আসন সংখ্যা বাড়ালেই তো টাকা,
কাঁড়িকাঁড়ি টাকা। তাইত আজকাল খোলামেলা আংগিনা
পাওয়া যায় না।


আধুনিক বিলাসিতার আড়ালে ঊর্ধ্যগামী বাসাবাড়িতে
শোবার ঘর কবুতরের খুপরি যেন।
তবুও বলতে পারা ১৩০০ বর্গফুটের বাসায় তিন তিনটে
শোবার ঘর, ডাইনিং, ড্রয়িং, কীচেন।
কি নেই? হাঁ জায়গা আঁটোসাঁটো হোক
কিন্তু শব্দ গুলো খুব মিনিংফুল এবং লোভনীয়।
তাতে জোরেসোরেই আছে আধুনিকতার উলংগ
বাড়াবাড়ি। এই যেমনঃ তিনটে শোবার ঘর
সাথে এটাচ্ট টয়লেট, ঝোলা বারান্দা,
ডাইনিং, ড্রয়িং, কীচেন, কমন টয়লেট বাহ্!


তাই ভাবছিলাম তোর তো খোলামেলা
থাকার অভ্যেস সেই ছোট বেলা থেকেই।
বাপ-দাদার ভিটেয় এ পাশ ও পাশ ছুটাছুটি করে
আংগিনায় এক্কাদুক্কা খেলেছিস।
চোখ-মুখ, হাত-পা ধূয়ে লুটোপুটি সন্ধ্যায়
হামোনিয়ামে সেধেছিস রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল,
পল্লী অথবা লালন।


ঢাউস খাটে গিয়ে হাত পা ছুঁড়ে ঘুমিয়েছিস বেঘোরে।
মোরগের ডাকে ভেংগেছে ভোরের ঘুম।
তারপর আলুভাজি আর ডিমের ওমলেটে
সেরেছিস নাস্তা। এখন কি ভাল লাগছে
এয়ার হোস্টেজের খাবার?  
তাই হয়ত তোর একটু অসুবিধে হওয়ারই কথা।
নভোচারী নাইই হোলি তবুও নবজাতকের আহ্বান বলে কথা।
তাই শুভ হোক তোর আকাশ পথের যাত্রা।


০৫ মে, ২০১৯।