কবি বন্ধু ইমতি’র কবিতার বিষয়ে সাম্প্রতিক ধ্যান ধারণাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে মনে হল এই ঘারানারকে নিয়ে কিছু করা যায় কি না। কবি বন্ধুও তাই চাইছিল। এটা ভাবতে গিয়ে মনে পড়ল একক ভাবে দেশের কবিতা নিয়ে ভাবতে। আমরা  প্রেম, প্রীতি, ভালবাসা, সুখ, দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ, হাসি, বেদনা, মায়া, মমতা, ফুল, পাখি, সাগর, পাহাড়, নদী-নালা, চন্দ্র, সুর্য, তারা, আকাশ, আলো, আঁধার, দিন রাত্রি, মাঠ, ঘাট, প্রকৃতি ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে হাজার হাজার কবিতা লিখছি, কিন্তু ঐ একই ভাব এবং বিষয়কে একটু ঘুরিয়ে দেপ্রেম এবং দেশাত্ববোধ ও আমাদের গৌরবগাঁথা ইতিহাস নিয়ে দেশের উপর কবিতা লিখছি কম। সুতরাং দেশকে নিয়ে কবিতা তো লিখবই, সেই সাথে কবিতার কাঠামোগত অংগ সৌষ্ঠব নিয়ে যদি একটু আকর্ষন বাড়ানো যায় তাহলে দেপ্রেম এবং দেশাত্ববোধ নিয়ে কবিতা লিখতে হয়ত অনেকেই আনন্দ ভরেই অনেক কবিতা লিখবে। কবি বন্ধু’র আন্তরিক প্রয়াসও তাই, সেই সাথে একটা স্টাইল সৃষ্টি করা। এটা অবশ্য ইমতি’রই কৃতিত্ব।
এ সব নিয়ে ভাবতে ভাবতে তাই আমি পিরামেডিক আকৃতিটাকে এবার স্মৃতিসৌধ আকৃতিতে নিয়ে কবিতার ধরণকে   “স্মৃতিসৌধ কবিতা” নামকরণ করে এর সাথে কতগুলো মৌলিক ভাব ও বিষয় নিয়ে ভাবতে চেয়েছি। যেমন এই  “স্মৃতিসৌধ কবিতা” গুলোতে শুধু মাত্র  দেশ  প্রেম, মাতৃভূমি মা, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা, মুক্তি যুদ্ধ, পতাকা ইত্যাদি নিয়ে অর্থাৎ দেশাত্ববোধ নিয়ে বিভিন্ন কথা মালায় সাজানো থাকবে দেশের কবিতার কাতারে।
কবি বন্ধু ইমতি’র ঘারানার সাথে অন্যান্য বিষয়ের মত এখানে কেবল অক্ষর গুনে (যুক্তাক্ষরকে একটি অক্ষর হিসেবে নিয়ে) প্রথম লাইনে ০১ অক্ষর, দ্বিতীয় লাইনে ০২টি, তৃতীয়তে ০৩টি অক্ষরের শব্দ, এভাবে যতটি লাইন নান্দনিকভাবে একটি পাতায় কবিতার ভাব, বিষয়, সৌন্দর্য, আবেদন, ছন্দ (প্রয়োজনে) ইত্যাদি ঠিক রেখে লেখা যায় তা করা যাবে, শুধু মাত্র পঞ্চদশ লাইনের হতে হবে তা নয়। এ ছাড়াও এ কবিতা কেবল মাত্র অবরোহী ধারায় লিখিত এবং পঠিত হবে। যেমন “স্মৃতিসৌধ কবিতা” নিয়ে আমার প্রথম কবিতা “স্মৃতিসৌধ”


১  অক্ষর                   ও
২  অক্ষর                 মাগো
৩  অক্ষর                কেন যে
      “                আজো কাঁদো
“                     ছেলের জন্য,
“                   তোমার ছেলেরা
“                 তো হারিয়ে যায়নি
“               তারা দেখো মা দাঁড়িয়ে
“              আছে ঐ স্মৃতিসৌধ হয়ে
“            তোমাকেই ভালবেসে ধন্য।
“           দিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ,
“         দিয়েছে লালসবুজের পতাকা,
“      ওরা তো তোমারই বীর মুক্তি যোদ্ধা
“       সন্তান। ওরা হারায় না মাগো, হারতে
“      জানেনা, কেবল জানে যুদ্ধ করে জিততে।
“     তাইত ওরা থাকবে বেঁচে ইতিহাসে লেখা
“  হাজার গল্প আর কবিতায় আজীবন বোদ্ধা।
  তাই কেঁদোনা মাগো কেঁদোনা তুমি আর কোনদিন
১৯ তোমার ছেলেরা জাগ্রত সদা শোধিতে তোমার ঋণ।


(এ পাতায় Center Text Option না থাকায় স্মৃতি সৌধ সাজাতে কষ্ট হচ্ছে। এখন বোধ হয় এডমিনকে এ অব্শন গুলো নিইয়েও গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে)


এই কবিতার দিকে তাকালেই বুঝা যাবে যে,


ক।  এটা “জাতীয় স্মৃতিসৌধ” এর আকার ধারণ করেছে,


খ।  এটা একটা দেশাত্ববোধ ও মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক কবিতা,


গ।  এটা একটা অক্ষরের ভাবার্থ দিয়ে শুরু হয়ে চরণের সংখ্যা (এখানে ১৯টি) অনুযায়ী অক্ষর (১৯টি) সংখ্যা বিন্যাশ পেয়েছে, (প্রয়োজনে সংখ্যা বাড়তে পারে)।  অর্থাৎ ২য় চরণ হলে ০২ অক্ষর, ৫ম চরণ হলে ০৫টি অক্ষর, অষ্টাদশ চরণ হলে ১৮টি অক্ষর হবে অথবা দ্বাবিংশ চরণ হলে ২২টি অক্ষর হবে ইত্যদি। যুক্তাক্ষরকে অবশ্যই একটি অক্ষর হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।  


ঘ।  এর ধরণ কেবলমাত্র অবরোহী,


সর্বপরি বা মোদ্দা কথা জাতীয় স্মৃতিসৌধ’র আকার নিয়ে “স্মৃতিসৌধ কবিতা” হতে হবে এককভাবে কেবল মাত্র দেশাত্ববোধের উপর। এটা এ জন্যই যে “স্মৃতিসৌধ কবিতা” বললেই যেন আমরা বুঝতে পারি আমরা দেশের অর্থাৎ দেশাত্ববোধের কবিতা নিয়ে কথা বলছি।