আমার অবর্তমানে তবুও হয়ত পড়ে থাকবে আমার শেষ দীর্ঘশ্বাস।
সে দীর্ঘশ্বাস কি ইথারে ভাসিয়েছিল তোমাকে নিয়ে আমার না
বলা কথার শেষ মর্ম কথা? যার জন্য পেয়েছিল সে পৃথিবীর
বাতাসে এক খন্ড পরিসর সেই প্রিয় মানিসীর জন্য যাকে শেষ
বারের জন্য এক নজর দেখব বলে তার পথ চেয়ে ছিল কত
গভীর আকুতি।


কেন শেষবারের মত হল তার জন্ম, কেন তাকে ধরে রাখা
যায়নি বুকের মধ্যে? কাকে ইচ্ছে হয়েছিল অন্তিম শিয়রে কোন
আশায়, কোন আঘাতের নিঃশব্দতায় কাকে মনে পড়েছিল বার
বার! সে ভেসে যেতে যেতে কি মনে রেখছিল আমার বুকের
শেষ ভালবাসা, মনের শেষ আকুতি, শেষ চাওয়া, না বলতে
পারা শেষ কথাটুকু?


আজ ঔষধি শুভ্র বিছানার মননে সন্ধ্যাটা তাই ছিল বড্ড অচেনা,
আজ ঘরে ফেরার ইচ্ছাটা আর জাগেনি কেমন এক অচেনা সাড়ায়,
আজ নিয়ন্ত্রিত পথ্যের নেপথ্যে ছিল অচেনা ক্লান্তি আর অবসাদের ছোঁয়া,
আজ চোখ বুজা চিন্তায় ছিল বিক্ষিপ্ত অচেনা অনুভূতির আসা যাওয়া।


মনের মধ্যে একটুও অস্থিরতা জাগেনি আজ। এম্বুলেন্সের সাথে কাংখিত
পথ অবরোধ করে রেল সড়কে  কতবার কতটা রেলগাড়ি কোন গন্তব্যে
ছুটে গেল তার জন্যও আজ কোন শংকা নেই, ব্যকুলতা নেই। ঘড়ির  
ডায়ালে, মোবাইলের পর্দায়, সন্ধ্যার আকাশে, পথের দূরত্বে, গাড়ি ঘড়ার
জ্যামে- কোথাও দৃষ্টি নেই। আজ চোখের পাতাও ছিল প্রায় স্থির এবং
লক্ষ্যভ্রষ্ট।  


অভিসারে পথ চলতে কারও শরীর ঘামে ভিজে হারালো কিনা মন
প্রতিক্ষিত ভালবাসার উচ্ছ্বাসে, সে নিয়েও আজ বুকের মধ্যে ছিল
না আহাজারি। কারও চোখের ভাষা, ঠোঁটের ভাষা, শরীরের ভাষা
বুঝার জন্য নেই বাড়তি যত্ন। মুখে পছন্দের পথ্য তুলে দিতে কারও
আদরের হাত আসেনি আজ মুখের কাছে। তবুও ফিরতে  হয়, ফিরে
যেতে হয়, সকলকেই যে ফিরে যেতেই হবে একদিন। শুধু হয়ত পড়ে
থাকবে শেষ দীর্ঘশ্বাস।