এখনও দরজার পাল্লায় আমি ঝুল খাই,
এখনও বারান্দার বর্গা ধরে ঝুলে থাক।
পারলে এখনও জানালার খিল দ্রুত খুলে  
পাঁচীলের অপারে চেনা দীগন্তে ছুটে চলা
যাত্রিবাহী ট্রেনের চলে যাওয়া পথে চোখ
রাখি। আর ভাবি কতজন এলো গেল এ
পথে অথচ তোমাকে কেন একটিবারও
দেখলাম না রেল কামরার জানালায় চোখ
রেখে খুঁজছ কাউকে। অথচ আমি আজও
তোমাকে খুঁজি, আজও পথ চেয়ে রই। তুমি
কি আমকে মনে করে একটি বারও খুঁজো?  


হোক না সে খুঁজাটা আমাকে নয় অন্য  
কাউকে, অন্য কোন প্রকৃতিকে, পিছে
ছুটে চলা অন্য কোন ভাললাগা দূরের
প্রতিচ্ছবকে। তবুও তো ভাবতাম তুমি
এখনও এ পথ ধরেই তোমার জীবনের
কোন অন্বেষণে আজও ছুটে চলেছ মরিচিকা
নয় মরমী ভালবাসার জন্য সকল বাঁধা
আর নিন্দাকে উপেক্ষা করে। ট্রেনের সঠিক
গন্তব্যের মত তোমার গন্তব্য হয়ত আজও
ফিরে এলো না তোমার জীবন ইস্টিশনে,
বিরতির জন্য তুমি আজও পেলে না সবুজ
সিগন্যাল! কিন্তু আমি তো আজও তোমার
ঠিকানা হয়ে ইস্টিশনে ঠাঁইয় দাঁড়িয়ে থাকি।


আমাকে বড় হতে দিলে কই? কৈশর, যৌবন
পেরিয়ে আমি আজ এই জীবন সায়াহ্নে এসেও
যে তোমার চোখে সেই ছোট বেলার শিশুটি
হয়েই রইলাম। কে আমি, কি আমি, কোথায়
আমি, কেন আমি, কার আমি, কোথায় ছিলাম,
কোথায় আমি? এর উত্তর আজও পেলাম না।
শুধু এ টুকুই মনের মধ্যে আলোড়িত হয়ে
আমায় বিমুখ করে রাখল, আমি আজও বড়
হইনি, আমি আজও কপালের এক পাশে নজর
না লাগা কাজল পরা, গালে ছোট্ট করে আদর
নেয়া ছোট্ট শিশুটি, খুব আদরের এবং আহ্লাদের!
তাই জীবনকে আর ভাগ করা গেল না।