বাঁচতে চাই না আমি


কে বাজাল শাঁখ?
বাজিও না আর।
ওই একবারে জেনে গেছে গোটা দেশ
পৃথিবীর আলো দেখেছে একটি শিশু।
জানো না ঠাকুমা, অচিরেই সর্বনাশ।
আমি যে একটা কন্যাশিশু-
এ খবর পেতে হবে না ওদের দেরি।
ওদের শিকার শিশু থেকে যত নারী।
শকুনের দল নখ দিয়ে ছিঁড়ে খাবে
দিনের আলোয়, রাতের আঁধারে, বাজরা-খেতে, নির্জন-পথে কিংবা গাড়ির ভিতরে।
পিছু নেয় ওরা
থাকে সুযোগ-সন্ধানে।


এক কাজ কর, এক্ষুনি এসেছি আমি।
তোমার হাতেই মৃত্যু হোক।
এ মরণ হবে তবে অতীব সুখের।


যদি আমি বেঁচে থাকি
জিভ কেটে নেবে,
ছুরির আঘাতে ফালাফালা হবে বুক
উত্তপ্ত শলাকা, ভাঙা কাচের বোতল, কাষ্ঠখণ্ড
ঢোকাবে যোনির ছিদ্রপথে।
যন্ত্রণা! অসহ্য যন্ত্রণা!!
বাঁচাও, বাঁচাও চীৎকারেও
কেউ সাড়া দেবে না তখন।
প্রতিধ্বনি হবে বাতাসে আকাশে
ও কথাই বারবার।


শেষ দেখাও দেখতে পাবে না তোমরা।
ওরাই পোড়াবে,
নয়ত পোড়াবে পুলিশ।


জানি তোমাদের খুবই কষ্ট হবে।
বিভীষিকাময় এ দেশে নারীর জীবন।
শোনোনি তোমরা নির্ভয়া, আসিফা, প্রিয়াঙ্কা বা মণীষার নাম?
কামদুনিতে কলেজছাত্রী,
বানতলায় অনিতা দেওয়ান,
শিল্পনগরী হলদিয়াতে মা ও মেয়ে-  
সবাই মরেছে ওদের অত্যাচারে।


বিচার পায় না নির্যাতিতা।
আড়াল করতে তৎপর আমলা।
ওদের বাঁচার কোনো অধিকার নেই।
মৃত্যুদন্ড দিতে আদালত দ্বিধাগ্রস্ত!


কত ব্যথা নিয়ে এ কথা বলছি জানো।
আমি, মা-বাবার কত সাধনার ধন।
তিল তিল করে জঠরে বেড়েছি আমি।
জন্মলগ্নে কান্না,
কিছু পরে মা'র দুধ,
আবছা দেখেছি মা'র মুখ।


আমি চলে গেলে
মা'র হাসিমুখ উবে যাবে চিরতরে।
তবুও বলতে বাধ্য হচ্ছি আমি-
মেরে ফেল,
মেরে ফেল আজ-  
বাঁচতে চাই না আমি।


© অজিত কুমার কর