.     রত্নাবলি বাবুর বাড়ি বাসন মাজে রোজ
কেমন করে দিন কাটে তার কেউ রাখে না খোঁজ।
               ঘরে রোগগ্রস্ত স্বামী
              ছ’বছরের মেয়ে রামি
প্রায় প্রতিদিন অর্ধভোজন ওখানে রোজ ভোজ।


   অসুখ কি আর এমনি সারে ওষুধপত্র চাই
  নুন আনতে পান্তা ফুরায় সাধ্য যে তার নাই।
             শিকড়বাকড় লতাপাতা
           এমন রোগীর এরাই ত্রাতা
     পেঁপেপাতার রস ভরসা ডেঙ্গু বলে যাই।


  লেখাপড়ায় ভালোই ছিল দ্বাদশ শ্রেণি পাশ
       অষ্টাদশী হবার পরই ঘটে সর্বনাশ।
             বাপহারা ওই দুঃখী মেয়ে
              হিংস্র পশু ফেলবে খেয়ে
    বাধ্য হয়ে মা দেয় বিয়ে নিঠুর পরিহাস!


    খাতার পাতায় আঁকত ছবি রত্না আশৈশব
     কিছু স্মৃতি অটুট আছে হারায়নি তা সব।
                ও’সব ছবির মূল্য কত
                 বোঝে না ও অতশত
    বুকের ভিতর গোপন ব্যথার নিরব কলরব।


     বাবুর ছেলে সৌম্যব্রত নামি ব্যারিস্টার
  দিল্লি থেকে কাল এসেছে ব্যস্ততা খুব তার।
              রত্নাবলি আঁকতে পারে
             সিতাংশুদা জানায় তারে
  ওর বাড়িতেই বাসন মাজে জীবন দুর্দশার।


     সৌম্যব্রত খুঁজতে থাকে উত্তরণের পথ
      জানতে পারে রত্নাবলি নিষ্ঠাবতী সৎ।
               সৌম্যব্রত নিজে কবি
             ওকে দিয়ে আঁকায় ছবি
     পাঠিয়ে দিল ইতালিতে উদ্দেশ্য মহৎ।


       বঙ্গনারী রত্নাবলি গেল সাগরপার
  বিদেশ থেকে আনল জিনে প্রথম পুরস্কার।
             বাবুর তখন টনক নড়ে
              স্টুডিও এক দিল গড়ে
     ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন ফিরল কপাল তার।


© অজিত কুমার কর