কাক ও কাকী অশথ গাছে ঘর বেঁধেছে খাসা
প্রেমের বানে ভাসছে দুজন ঝলমলানি আশা।
প্রতিবছর বাড়তে থাকে ওদের ছানাপোনা
সংখ্যাটি যে সঠিক কত নেইকো কারও গোনা।


ওই গাছেরই এক কোটরে বাঁধল বাসা সাপ
দম্পতি যেই বুঝতে পারে পড়ল মনে চাপ।
মা-পাখিটা ক’দিন আগে পাড়ল ছ’টা ডিম
দুজনারই তীক্ষ্ণ নজর সাপের ভয়ে হিম।


খাবার খোঁজে সেদিন গেছে দূরে একটা ঝিলে
সেই সুযোগে সাপটা গিয়ে ফেলল ছানা গিলে।
খাবার নিয়ে ফিরেই দেখে বাসায় ছানা নেই
কোথায় গেল কী যে হ’লো পেল না তার খেই।


পড়শি যত পশুপাখি কেমনে দেবে খোঁজ
কখন এসে চুপিসারে কে সেরেছে  ভোজ।
দুজনারই দুঃখ ভারী শুধুই কা-কা করে
দুচোখ বেয়ে অশ্রুধারা অবিশ্রান্ত ঝরে।


কিছুদিন পর আবার কাকী পাড়ল চারটা ডিম
খাবার খোঁজে কাক বেরলে ভাবনা নিঃসীম।
তখনই মা’র পড়ল চোখে উঠছে বড় সাপ
ক্ষণেক পরে সাবাড় ছানা বাড়ল মনস্তাপ।


গাছের নীচে ঝোপেই থাকে বন্ধু খেঁকশিয়াল
সমস্যাটা জানায় তাকে বাতলাতে ঠিক চাল।
কাকে কী কাজ করতে হবে বলল একে একে
শুনেই তারা ফিরল নীড়ে কা-কা কা-কা ডেকে।


রাজার বাড়ির মেয়েরা সব ঘাটে এসে থামে
গয়নাগাটি খুলে তারা দিঘির জলে নামে।
মা-পাখিটা পালিয়ে এল মুক্তামালা নিয়ে
প্রহরীরা ছুটছে পিছে আটকাবে কী দিয়ে।


ফেলে দিল মুক্তামালা সাপ যেখানে থাকে
প্রহরীরা দেখল সবই পড়ল বিষম পাকে।
গাছে উঠে গর্তটাতে খুঁচতে থাকে জোরে
সাপটা তখন বেরিয়ে এল মস্ত ফণা ধরে।


লাঠির ঘায়ে সাপের মরণ শান্তি পেল কাক
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ক’রে দুজনে খায় পাক।
বুদ্ধিবলে জিতল ওরা শত্রু হ’লো নাশ
শুরু হ’ল পক্ষী জুটির সুখের বসবাস।


(প্রচলিত গল্পের কাব্যিক রূপ)