*                  করম পরব
                অজিত কুমার কর


     সমাজটাকে ভালো রাখার পরব করম।
       আদিবাসী জনগোষ্ঠীর হৃদয় নরম।
             প্রকৃতি মা'র পূজা ওদের
            লোক সমাগম হয়েছে ঢের
     কোথাও যেন না রয় ত্রুটি, ব্যস্ত চরম
    রং বাহারি পোশাক গায়ে কী মনোরম!


      অরণ্য ও কৃষিভিত্তিক লোক উৎসব
       অনাড়ম্বর প্রাচীনত্বে আপন বিভব।
            বিরাজ করে শান্তি ও সুখ
             দূরে পালায় অসুখবিসুখ
      খুশির আমেজ উন্মাদনা সবাই সরব
      এখানেই তো সার্থকতা দেশের গরব।


    পাশাপাশি রাজ্যগুলো শামিল পূজায়
      শুক্লা একাদশী তিথি ভাদরে পায়।
           মেয়েরা যায় নদীর ঘাটে
           শালের দাঁতনকাঠি কাটে
বালিভরা ডালায় রেখে জাওয়া-গীত গায়
  ডালাটাকে মধ্যে রেখে তিনটি পাক খায়।


বাগান-জাওয়া তৈরি হবে সবাই উদ্বেল
মটর-জুনার, মুগ-বুটে দেয় হরিদ্রা তেল।
             কুমারীরা সিনান ক'রে
          পাতার থালায় রাখে ভ'রে
সিঁদুর লাগায়, কাজল পরায় তৃপ্তি অঢেল
যে যার ডালা সাজায় নিজে লাগে না বেল।


  একাঙ্গী বা সাঙ্গী জাওয়া বীজেই প্রভেদ
শর-কাঠি দেয় চিহ্ন স্বরূপ রইবে না খেদ।
        আড়ালে রয় বাগান-জাওয়া
        চলবে না আর নজর দেওয়া
  টুপা ডালা আনবে গাঁয়ে নেই ভেদাভেদ
জাওয়া মা-রাই করে এসব অদম্য জেদ।


  ঝিঙে লতার পাঁচটি পাতা উল্টানো চাই
পাঁচটাতে পাঁচ দাঁতনকাঠি আর কিছু নাই।
           আলপনাও পূজার আচার
          কাজল সিঁদুর লাগায় এবার
     করম-শালের দুটি শাখা মণ্ডপে পাই
     কুমারীরাই করবে পূজা প্রচলন তাই।


   পূজার শেষে ছড়াবে বীজ গজাবে গাছ
      রাখি বাঁধার পরে শুরু অনূঢ়া নাচ।
              ভাদরিয়া ঝুমুর গানে
            পুলক জাগে সবার প্রাণে
       নেচে-গেয়ে পরিক্রমা অন্তরে আঁচ
   চোখের তারায় উজ্জ্বলতা চকচকে কাচ।