* কন্যা লক্ষ্মণার প্রতি
দুষ্টু হবই এটাই নাকি ছিল আমার ভাগ্যে লেখা
জন্মলগ্ন থেকেই শুরু মাতৃগর্ভে কুকাজ শেখা।
ভাঙবে শুধু, গড়বে না ও'
বিদুর-বাণী এই শুনে নাও
পারিনি মা খন্ডাতে ওই বিধিলিপি যায় না দেখা।
অন্ধ পিতার দস্যি ছেলে তাঁর কপালে ছিল না সুখ
মায়ের মুখের কথা শুনে অবলোকন আমার এ' মুখ।
চক্ষু থেকেও অন্ধ যে মা
নিষেধ করবে তাঁরে কে মা
ছিটেফোঁটাও নেইকো প্রীতি হিংসাভরা আমার এ বুক।
মানুষ হবার শিক্ষাদীক্ষা পাইনি আমি মা-লক্ষণা
মানুষ আমি ঠিকই হতাম পেতাম যদি মা'র এক কণা। পাণ্ডুরাজ্য হস্তিনাপুর
এখান থেকে অনেকটা দূর
পায়নি খবর বাল্যকালের বুকে জমাট সব বেদনা।
প্রতিহিংসা, ঈর্ষা-ঘৃণা এসব নিয়ে আমার জগৎ
বিড়ম্বিত জীবন আমার কাঁটায় ভরা সমগ্র পথ।
কে ভালো কে মন্দ জানি
যা রটে নয় দেবের বাণী
দোষে গুণে ভরা-জীবন ভালো হবার নিলেও শপথ।
মেরেছিল একটা হাতি অশ্বত্থামা মরেনি তো
যুধিষ্ঠীরও মিথ্যাবাদী না হলে কি ও'পথ নিতো।
কর্ণকে বধ ক'রল ওরা
বক্ষে বিঁধে তীক্ষ্ণ ছোরা
চাতুরিতে সেরা অর্জুন সৎ হলে ঠিক শাবাশ দিতো।
সুহৃদহারা হলাম আমি শিখণ্ডীতে ভীষ্ম বাঁধা
কৃষ্ণ যখন ওর সারথি কোথায় প্রিয়তমা রাধা।
দিলাম সঁপে শাম্ব-হাতে
শুধাসনে মা, কার কথাতে
কাদার পুঁটলি ঘোরাই যদি সবার গায়ে পড়বে কাদা।
বদলাতে আর পারব না মা খল উপাধি গাত্রে সাঁটা
জানি না কী ভাগ্যে আছে চলছে ওদের ফন্দি আঁটা।
পিতা আমি জন্মদাতা
আগলে রাখে যেমন ছাতা
আমার প্রয়াণ হলে পরে রইবে না আর পথে কাঁটা।
#অজিত কুমার কর