*
দরিদ্র এক মুচির বাড়ি দুরের কোনো গাঁয়ে
চলে যেত জায়া-পতির অতি অল্প আয়ে।
সারাদিনে তৈরি হতো একটি জোড়া জুতো
প্রবীণ মুচির শীর্ণ দেহ কষ্টে গলায় সুতো।


কারখানা তার ঘরের পাশে একটা ছোট ঘরে
সকাল থেকে সাঁঝ অবধি সেখানে কাজ করে।
গৃহিণী তার বলল এসে চামড়া কিনতে হবে
একটু বেশি তৈরি করো মিলবে টাকা তবে।


দুটি জোড়ার চামড়া শুধু কাটলো সারাদিনে
তৈরি করতে পারে না সে দিনের আলো বিনে।
বুড়ো বুড়ি নিদ্রা গেল রাত্রে খেয়ে দেয়ে
সকালবেলা বুড়ো অবাক তৈরি জুতো পেয়ে।


নিপুন হাতের কারিগরি পালিশও বেশ ভালো
কারা রাতে করলো এসব কোথায় পেল আলো!
ওই দু'জোড়া বিক্রি করে দ্বিগুণ অর্থ পেল
আরো বেশি চামড়া কিনতে বাজার চলে গেল।


এবারে সে চারটি জোড়ার চামড়া কেটে রাখে
সকালবেলা তৈরি জুতো সাজানো তার তাকে।
দূর থেকে লোক কিনতে আসে শংসা মুখে মুখে
দুরবস্থা কাটলো বুড়োর আছে বড়ই সুখে।


আরো বেশি বেশি করে আনছে জিনিস কিনে
বুড়োর তৈরি জুতোর কদর বাড়ছে দিনে দিনে।
বুড়ো বুড়ি ভাবছে বসে তৈরি করছে কারা
কখন আসে, ক'জন আসে দেখতে কেমন তারা?


রাত্রি জেগে বসে আছে ফোকরে চোখ রেখে
বাজলো যখন রাত বারোটা ওদের আসতে দেখে।
ঘড়ি থেকে বেরিয়ে এলো একটি ডজন পরি
এক নিমিষে কাজ সমাপন, নৃত্য হাতে ধরি।


পোশাক-আশাক কিচ্ছুটি নেই দেখে দুঃখ পেল
পরের দিনই পোশাক কিনে ঘরেই রেখে এল।
যথারীতি সবাই এল তেমনি গভীর রাতে
কাজের শেষে পোশাক পরে নৃত্য গীতে মাতে।


ওদের দেখে বুড়োবুড়ির আনন্দ না ধরে
দীর্ঘদিনের জমা যত সোহাগ পড়ে ঝরে।


(Fairy tales - The twelve elves অবলম্বনে লেখা)