*
ব্যবসায়ীর দামাল ছেলে
ছোটো থেকেই এলেবেলে।
দুষ্টুমিতে সবার সেরা
দশটি গাঁয়ে একটি মেলে।


বাবা কাজে ব্যস্ত থাকে
মা-ই তাকে লক্ষ্য রাখে।
সুযোগ পেলে পাড়ায় গিয়ে
মারবে ধরে যাকে তাকে।


নিত্য নতুন মায়ের জ্বালা
পড়শির কান ঝালাপালা।
অভিযোগের দেয় না জবাব
মা যেন তাঁর বোবা কালা।


মা নেই সেদিন, একলা ঘরে
যা ইচ্ছে তাই তখন করে।
ফিরেই চক্ষু ছানাবড়া
কী করেছিস মনু ওরে!


একটা চেয়ার হাতল ভাঙা
ঘরের মেঝে হলুদ রাঙা।
সারাটা ঘর লন্ডভন্ড
ও' রয়েছে দারুণ চাঙা।


রাগে মা ওর আপেল ছোঁড়ে
হাসল মনু ক্যাচটা ধরে।
জানো তুমি আপেল প্রিয়
শুনে মায়ের অশ্রু ঝরে।


ফিরবে কবে তোর সুমতি
করলি ঘরের এমন ক্ষতি।
ক্লান্ত মাতা ঘুমিয়ে পড়ে
স্বপ্নে দেখে দিব্যজ্যোতি।


বলল পরি হেসে হেসে
'বলবে তারে ভালোবেসে।
দিচ্ছি তোমায় কিছু কাপড়
বিক্রি কর এবার দেশে।'


বেরোয় মনু কাপড় নিয়ে
ঘুরছে এপথ-ওপথ দিয়ে।
বিক্রি হয়নি একটিও তাঁর
মূর্তি পাশে বসলো গিয়ে।


আঁধার নামে ধীরে ধীরে
শুধায় মনু মূর্তিটিরে-
কাপড়গুলো নিন-না কিনে
মূল্য নিয়ে যাবো ফিরে।


পাথর-মূর্তি নীরব থাকে
দেয় না সাড়া মনুর ডাকে।
সম্মতি তাঁর আছে ভেবে
কাপড়গুলো দিল তাকে।


খালি হাতে ফিরছে দেখে
মা জননী শুধায় ডেকে,
কত টাকায় বিক্রি হলো
অত কাপড় কিনল কে কে?


দৌড় দিল সে স্ট্যাচুর দিকে
শুধায় মনু মূর্তিটিকে,
এখন যদি না দাও টাকা
মুন্ডু ভেঙে দেবো ফিকে।


রাগে মনু ডান্ডা মারে
ছড়ায় মোহর চারিধারে।
মোহর গুলো কুড়িয়ে নিয়ে
পৌঁছে গেল ঘরের দ্বারে।


মা তো অবাক মোহর দেখে
এক্ষুনি যা আসবি রেখে।
মনু বলে, মূর্তি দিল
ভাগ্যলিপি দেবতা লেখে।


ব্যবসায়ে মন এবার দিল
বাবার পথই বেছে নিল।
পিতা-মাতা দুজন খুশি
এমন বুঝি লেখাই ছিল।