সত্যেন্দ্রনাথ ভারতমাতার বড় সাধের ধন
দু’চোখ জুড়ে বহির্জগৎ উদ্ভাবনে মন।
বিরামবিহীন অধ্যবসায় সফলতার মূল
কোয়ান্টামের গূঢ় তত্ত্ব ব্যাখ্যাতে নির্ভুল।


সরস্বতীর কৃপাধন্য চিত্ত চমৎকার
ইচ্ছাশক্তি এত প্রবল বিঘ্ন মানে হার।
বঙ্গবাসীর জন্য সুধীর ভাবনা নিরন্তর
উচ্চশিক্ষার জটিল তত্ত্ব হয় যেন নির্ঝর।


এক আকাশে দুইটি তারা সত্যেন্দ্র-মেঘনাদ
অভিনহৃদয় বন্ধু তাঁরা আনন্দ-সংবাদ।
মিশ্র গণিত বিষয় ওদের ব্যাপ্তি বহুদূর
সমকালীন গবেষণায় ওরাই কোহিনুর।


প্রশংসিত বোস-সংখ্যায়ণ বিশ্বজোড়া নাম
আঁধার খুঁড়ে আলোর দিশা পূরল মনস্কাম।
শান্ত স্নিগ্ধ সৌম্য মূর্তি সৃষ্টি বিধাতার
অবগাহন সুরসাগরে এস্রাজে ঝংকার।


‘বারোজনের আড্ডায়’ তাঁর নিত্য আগমন
আলোচনায় বাদ যেত না সাহিত্য দর্শন।
এমন মানুষ খুবই বিরল পিছপা কোথাও নয়
অপূর্ব তাঁর বাচনশৈলী হৃদয় করে জয়।


অতি সহজ সরল ভাষায় মধুর শিক্ষাদান
ছাত্ররা তাই আসত ছুটে গুরু-অন্ত-প্রাণ।
অনাড়ম্বর জীবনযাপন অবিশ্রান্ত কাজ
মাঘের শীতে গায়ে কম্বল বিচিত্র তাঁর সাজ।


অন্তরালে ঘটছে কত ব্যাপার অনুক্ষণ
উন্মোচনে ব্যস্ত তিনি নিত্য নিরীক্ষণ।
বোসন কণা মেনে চলে বসু সংখ্যায়ণ
ফার্মিয়ন-রা ফার্মি-ডিরাক জানে বিদ্বজ্জন।  


স্বদেশপ্রীতি শিরায় শিরায় তুলনা তাঁর নাই
দেশের মাটি সোনার বাড়া পদ্ম ফোটে তাই।
হিমালয়ের অগাধ স্নেহ জমাট বাঁধে নীর
বোটানিকের বটবৃক্ষ ধ্যানস্থ সুস্থির।


আইনস্টাইন সত্যেন্দ্রনাথ নক্ষত্র উজ্জ্বল
জীবজগতের হিতে তাঁরা হয়েছেন সফল।
দুনেরই বিষয় ছিল পদার্থবিজ্ঞান
আবিষ্কারে যথাযোগ্য মেলেনি সম্মান।


ঔজ্জ্বল্য তাঁর রবির মতো সুহৃদ সবাকার
অবস্থিতি এখন কোথা এসোনা আর’বার।
হারতে তুমি জান না যে সবখানেতেই জিৎ
মনমুকুরে মারত উঁকি জীবজগতের হিত।