মিছিলের পুরোভাগে রমাদি।
মুষ্টিবদ্ধ হাত উর্ধ্বে যার,
শক্ত চোয়ালের সঞ্চালনে
শব্দগুচ্ছ নিঃসৃত বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর।
আর পদার্থবিদ্যার ক্লাসে
ব্ল্যাকবোর্ডের সামনে রমাদি।
আলোকের প্রতিফলন বোঝাতে ব্যস্ত।
শান্ত নম্র আমার 'আদর্শ'।
মেলাতে পারিনি।
দিনের পর দিন চোখ বুজে
ভেবেছি একই কথা।
ভেবেছি সত্যি নয়, সত্যি হতে পারে না।
মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে উঠে
প্র্যাকটিকাল খাতার শেষ পাতায়
হাত বুলিয়েছি। আদর করেছি,
যেখানে রমাদির দীর্ঘ সম্পূর্ণ স্বাক্ষর।
রমা ভট্টাচার্য।
সংক্ষেপে নয়,
পূর্ণাঙ্গ সই চেয়েছিলাম আমি।
রমাদি আমার
রমাদি আমায় বেশি ভালোবাসেন।
অমিতা, শুক্লা, ওরাও বলত
একই কথা।
বিশ্বাস করিনি।
সত্তর দশকের বিপ্লব।
শিক্ষিকা থেকে বিপ্লবী,
অবশেষে কারাবরণ।
কিসের বিপ্লব বুঝিনি তখন,
তবু মনে করেছি_
রমাদি, আমার রমাদি
তুমি ভুল করোনি নিশ্চয়ই।
তুমিই ঠিক। তুমিই আমার সত্য।
রমাদি আর স্কুলে ফিরে আসেনি।
দুচোখের পাতা
ভারী হয়ে আসে।
স্বাক্ষরিত পাতায় এক ফোঁটা জল।
জেলখানায় নিপীড়িত রমাদির
ফর্সা শুকনো করুন মুখ।
তা কারার অন্ধকারেই থাক্।
চির উদ্ভাসিত হোক
সোচ্চারিত বলিষ্ঠ মুখমণ্ডল
এবং পদার্থবিদ্যার ক্লাস।