ঘর্মাক্ত কলেবরে, শহরের রাজপথে
কিংবা তপন দাবদাহে
চাষের জমিতে বসে
আকুতি বর্ষার।
বর্ষা পার করে বর্ষার আগমন।
শরতের প্রাক্কালে তাই বর্ষাবরণ।
মেঘমেদূর আকাশ
জলাশয় টলোমলো।
বাতাসে বৃষ্টির জলছবি।
বাতায়নে বসে
মনে মনে ছবি আঁকে
কবি শিল্পীগণ।
করে বর্ষা বরণ।


ক্ষেতভরা ফসলের স্বপ্ন নিয়ে
যে চাষি করেছিল বর্ষাবরণ,
গ্রামের স্কুল ঘরে আশ্রিত হয়ে
বর্ষাবরণের সুখ স্মৃতি
তাকে দংশায়, জঠর জ্বালায়।


চাষের জমির ওপর
বিপদসীমা পেরনো জল
বয়ে যায় ছলাৎ ছলাৎ।
বোকা বাক্সে ছবিটি মনোরম।
শিল্পীরা এঁকে নেয় তৎক্ষণাৎ।


শহরের জল নেমে যাবে
একদিন।
কাশফুল ফুটবেও
কোথাও কোথাও।
আধুনিক যন্ত্রে মৃন্ময়ী দুর্গার
গায়ের ভিজে মাটিও
শুকোবে ঠিক সময়ে।
আসবে শারদোৎসব।


নতুন বসনে সজ্জিত নগরবাসী
ছুটবে মন্ডপে মন্ডপে,
লাখ লাখ টাকার মন্ডপসজ্জার
প্রতিযোগিতা দেখতে।
হয়ত তাদের ভীড়ে মিশে যাবে
প্রতি বছর গ্রাম থেকে আসা
বানভাসির দল।
নব বসনের ছটায়
ম্রিয়মাণ হবে জীর্ণ বসন।
হাস্য কলরোলে চাপা পড়ে যাবে
ক্ষুধার আর্তনাদ!


হয়ত বা কোনো দরদী
এক আধটা টাকা ছুঁড়ে দেবে
ওদের ভিক্ষা পাত্রে।
হয়ত বা কোনো ক্লাব
বসাবে ত্রাণ শিবির।


আর বর্ষা চাইবে কি কেউ?
কত জল চাই? কত বৃষ্টি?
ওদের কাছে এখন অনেক জল।
ওদের চোখে এখনও প্লাবন।
সার্থক বর্ষা বরণ!