*** স্মৃতির সুবাস ***


একটা একটা করে
পেরিয়ে গেল অনেকগুলো বছর।
অথচ, মনে হয়, এই তো সেদিন।
ঠিকমত জ্ঞান ফেরেনি তখনও।
ফিসফিস শব্দে বন্ধু বলল -
জানিস তোর ছেলে হয়েছে,
বড় বড় চোখ, এক মাথা চুল,
দারুন দেখতে কিন্তু, যাই বলিস্।
চেষ্টা করেও চোখ খুলতে পারলাম না।


পরদিন যখন কোলে নিলাম -
ছোট্ট একটা পুতুল যেন।
কেমন হাত পা নাড়ছে।
সেই যে শুরু হল তোকে নিয়ে খেলা -
খেলতে খেলতে...
খেলতে খেলতে...
কখন যে বড় হয়ে গেলি!


স্কুল পেরোলি, কলেজ পেরোলি।
আজ তুই কর্ম জগতে।
যেদিন প্রথম উপার্জনের অর্থে
উপহার আনলি -
কি যে আনন্দ হচ্ছিল!


কখনো বাস্তবে,কখনো চিন্তনে,
কতগুলো বছর ধরে তোরই পাশাপাশি,
তোর আনন্দের, তোর দুঃখের
কেবলমাত্র ভাগীদার আমি।
মনে পড়ে তোর স্কুল জীবনের কথা।
কতই বা বয়স তখন, শিশুই বলা চলে।
চলে গেলি মিশন স্কুলে।
একটা শূন্যতা গ্রাস করেছিল আমাকে।
মাঝ রাতে জেগে উঠেছি কতদিন!
কাঁদছে কি আমার ছেলেটা?
বিছানা থেকে পড়ে যায়নি তো?
গায়ের চাদরটা কি একটু সরে গেল?


জানিস, সেই শূন্যতা এখনও -
অনুভব করে চলি।
একলা থাকলেই।
চোখ বুজলেই হৃদয়ে গাঁথা থাকে
সেই বড় বড় চোখ দুটো,
শান্ত, বাঙ্ময় তোর চোখ।
শিশু বয়স থেকেই সেই চোখে ছিল -
কত প্রশ্ন, কত প্রত্যয়, কত গভীরতা।
সব প্রশ্নের উত্তর হয়ত বা
জানা ছিল না আমার।
তবু চেষ্টা ছিল পথ দেখাবার।


আজ তোর জন্মদিন।
আরও অনেক দীর্ঘ পথ তোর
পাড়ি দেওয়া বাকি।
আশীর্বাদ আর শুভেচ্ছার সাথে,
দিলাম স্মৃতির সুবাস মাখা,
উজ্জ্বল মসৃণ এক দীর্ঘ চলার পথ।
চলার পথ...পথ চলবার ...