আজ বই মেলার প্রাঙ্গণে নতুন সব গ্রন্থের
সৌরভে মূর্ছিত হচ্ছিলাম বার বার,
একটার পর একটা স্টল ঘুরে বইয়ের
গন্ধে নেশাগ্রস্ত হয়ে দিগ্বিদিক ঘুরছিলাম।
কত শত মানুষের পদচারণায় মুখর
হয়ে আছে মেলার আঙিনা, বসেছে আড্ডার পসরা...
মনে আছে একসময় তুমি আমি মিলে গ্রন্থের
টাওয়ার বানাতাম বেলা শেষে ঘরে ফিরে?
সেসব কথা অবশ্য কতকাল আগেই ভুলেছি,
স্মৃতি গুলোর উপর ধুলোবালির আস্তর পরে ধুসর হয়েছে,
প্রিয় কবি লেখকদের বই কেনার এক প্রতিযোগিতায়
মেতে উঠতাম দুজন, অট্টহাসিতে দুজন প্রমাণ করতাম-
বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয়না।
আমার মনে হত তোমার অভ্যাস বদলেছে হয়ত,
কিন্তু আমি এখনো প্রাণের মেলায় নিজের
অস্তিত্বকে খুঁজে বেড়ায়, খুঁজে বেড়ায়
নিজের শিকড়ের খবর, নিজের আত্মাকে
পরিশুদ্ধ করার এই যে এক ভরা মৌসুম।
কিন্তু আমার মনে হওয়াকে তুমি অকস্মাৎ
মিথ্যে করে দিলে, নামকরা প্যাভেলিয়নের
কোনায় তোমার লেখা কবিতার বই
”জোনাকির আলোয় দীপ জ্বেলে যাই”,
নামটি দেখতেই ঝট করে হাতে নিয়ে উল্টোতে
থাকি পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা, প্রতিটি লাইনে, প্রতিটি
অক্ষরে, কবিতার প্রতিটি ছন্দে যে তুমি
আমাকেই সৃষ্টি করে রেখেছো। তোমার আমার
যুগলবন্ধীর কোন স্মৃতিই যে বাদ দিলে না তুমি,
কবিতার পরতে পরতে যে তুমি হাসনুহেনা,
বেলী, চাঁপা, শিউলি আর মাধবীলতার কথা বুনেছ
আর কেউ না বুঝুক আমি তো বুঝি, আমি ছাড়া
এরা আর কেউ নয়। এতটা কাল যে স্মৃতির উপর
মাকড়সারা জাল বুনে বুনে খসখসে ঠুনকো ধুসর
বানিয়েছে, এই একটা বই যেন সব জঞ্জাল ভেঙে
পরিষ্কার করে একদম চকচকে করে দিয়ে গেল,
কিন্তু চকচক করলেই কি আর সব সোনা হয়?
সেসব ভুলে যাওয়া স্মৃতিগুলো আবারো যে কাঁদাবে,
আবারো গাইতে শুরু করবে চেনা সুরে অচেনা গান।