রাই, সেদিনের পর থেকে যে তুমি মোটেও ভালো নেই
সে আমি বেশ বুঝতে পারছি;
তুমি আমায় এত ভালোবাসা দিয়েছ যে কোনো পরিমাপ যন্ত্রই তার জন্য গ্রহণযোগ্য নয়!
তার বিনিময়ে যা চেয়েছ তা দিতে আমি সত্যিই অপারগ ছিলাম।
এখনো অপারগ!


তোমার নিদারুণ ভালোবাসার বিনিময়ে
আমার কাছে শুধু একটি কবিতা চেয়েছিলে সেদিন!
ব্যাস, এতোটুকুই!
আমি যে কোনোদিন কারোর জন্য দুচরণও লিখিনি!


আমার বারবার মনে হয়েছিল
তোমাকে নিয়ে যে কবিতা লিখবো
তা হবে প্রেমের এক মহাকাব্যিক রচনা।
সেই কবিতা স্থান করে নিবে
বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে প্রেমেময় কাব্যের স্থান!
অথচ আমার সে জ্ঞান কোথায় ছিল?


আমি তোমাকে বা তুমি আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসলেও
আমি আমাদের ভালোবাসার কবিতা লিখতে ব্যর্থ ছিলাম।
এত উৎকৃষ্ট ছন্দ অনেক চেষ্টা করেও আমি লিখতে পারিনি।
আমি বেশ কয়েকবার কলম হাতে নিয়ে ব্যর্থ হয়েছি,
ছিঁড়ে ছুড়ে ফেলেছি-
শাদা পাতার উপর প্রেম ঢেলে দেওয়া অজস্র পঙক্তিমালা।


যতবার লিখেছি মনে হয়েছে
কিছুটা কমতি কিছুটা খামতি আছে আমার কবিতায়।
সেই কাব্যপাঠে যদি তোমার নাসিকারন্ধ্রে নিঃসৃত হয় দীর্ঘঃশ্বাস...!
আর যাই হোক আমি অন্তত তা সহ্য করতে পারবো না।
তাই তো যে যাই বলুক লোকে আমি লিখে গেছি ক্রমাগ্রত,
লিখে গেছি একটি প্রেমের কাব্য।


নাহ, আমি আজও সে কবিতা শেষ করতে পারলাম না।
তোমার রূপের কথা, তোমার গুণের কথায় যে হাজারটা রামায়ন, মহাভারত লিখেও শেষ করা যাবে না।
তুমি গ্রষ্টার যে অতুলনীয় সৃষ্টি
আমি সেদিন থেকে বুঝেছি যেদিন থেকে তোমাকে নিয়ে শুধু একটি প্রেমকাব্যে লিখব বলে কলম তুলে নিয়েছি হাতে।
তুমি আমায় ভুল বোঝ না।
আজও আমি অপারগ!


আমার ক্ষীণ জ্ঞানের কথা তোমাকে জানাতেই
তোমার মুখমন্ডল কালবৈশাখীর পূর্বে পৃথিবী যে বিদীর্ণতার রূপ নেয়-
তার সমতুল্যই বোধ হয়েছিল আমার।
আমি বুঝতে পেরেছিলাম
আমার পৃথিবী কোনো এক ভয়াল কাল বৈশাখীর মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
সেদিন তুমি আমার সাথে
সকল ধরণের পার্থিব অপার্থিব সম্পর্ক ছিন্ন করলে।
তবুও আমি জানি তুমি আজ ভালো নেই।



তুমিহীন আমার জীবন স্থবির,
যে জীবন আমার নয় সে জীবনের ভার আমি একাই বয়ে চলেছি।


শুধু অপেক্ষায় কোনো এক দৈববলে-
আমার কবিতা একদিন ঠিক শেষ হবে।
সেদিন বলবো, রাই আমি পেরেছি;
আমি পেরেছি তোমার জন্য এক প্রেমময় কবিতা লিখতে।
তুমি দুহাত বাড়িয়ে আমায় উষ্ণ আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরবে।
বলবে, তুমি আমার, শুধুই আমার।