সেদিন জনৈক ভদ্রলোক বললেন হেসে
কত শত কবির ছড়াছড়ি আমার সোনার দেশে!
হাসিখানা ছিল তিরস্কারে মাখা, মুখখানি বাঁকা-
ভালো লাগেনি মোটেই, যেন সত্য কথার ছবি আঁকা!
বললাম উত্তরে, ঠোঁটদুখানা চিৎ করে-
আমি নইতো অমন!
আমার লেখার ধার দেখ!- কত চমৎকার
যেন কবিতা ফুঁড়ে রমণী করছে চিৎকার!
নতজানু ললনা সমুখে এসে, ভালোবেসে
আমায় করে প্রেম নিবেদন!
আমি জানি ভদ্রলোকের সত্য বচন, জানে কজন!
নিজের কবিত্ব রক্ষায় করলাম-
করজোড়ে আবেদন।
ভদ্রলোক উঠলেন বলে- আহা মরি মরি!
করছেন কী? নেই কি কবি ভুরি ভুরি?
দাঁত দিয়ে জিভ কেটে বলি-
কই দেখ এত লেখক কিংবা কবির ছড়াছড়ি!
আমার মতো লেখক কজনা আছে?
লিখি গদ্য পদ্য উপন্যাস, হাটে মাঠে গাছে!
রমণী খুঁজে নিজেরে বইয়ের পাতায়,
বৃষ্টি দিনে আমার ছাতায় অথবা
ওই ওই যে প্রিয় বেইলী রোড কিংবা
লাভ রোডের মাথায়!
তবে কি সেসব মিথ্যে?
নড়েচড়ে বাবু বসলেন কেদারায়, বললেন বাজখাঁই-
বলো তো এত কবি আছে কোন দেশে এ ধরায়?
আর সহে না অপমান মোর গায়
চমকে উঠে ক্ষণিক দাঁড়াই
বললাম তারে, রেখে হাত ঘাড়ে-
ছাড়ুন তো মশাই, আমার লেখা পড়েননি নেশায়!
কী যে যাদু লেখা তাতে, রমণী হোক না যত খুঁতখুঁতে,
নিজের ছায়া দেখে নায়িকার রসে, একেবারে টসটসে!
এসে আমার কাছে, ঘুরঘুর করে পাছে পাছে!
শুধোয় অযথা, জানলাম কীভাবে তাহার মনের কথা!
আমি হেসে বলি, তোমার হস্তরেখাগুলি বড়ই যে চেনা!
রমণী অবাক হয়ে, ভয়ে ভয়ে বলে আমায়-
তুমি মহান কবি, তুমি মহান!
ভদ্রলোক শুনে হাসে উচ্চৈস্বরে, কণ্ঠের ভাড়ে বজ্র ঝরে
তুমি কবি জাত বড়ই চরিত্রহীন! দিন দিন-
বাড়ছে তোমাদের উৎপাত!
একি অপবাদ! একি অপবাদ!
রমণীর প্রেম কবিতার প্রতি কবির প্রতি নয়!
বললাম করুণ সুরে, খানিক গিয়ে দূরে-
এতদিন যা ভেবেছি সত্য হলো সে ভয়!
রমণীর প্রেমে কবিদের মোহ ছিলোনা কভু হায়,
শত শত কবি আছে হয়তো দেশে, চরিত্রহীন কেউ নাই!
ভদ্রলোক এইবার সমীহ করে বলে, কালের কলে
কত কবি হারিয়েছে যুগে যুগে!
কবি এক প্রেমিক নয়তো হুজুগে!
তা তুমি কবিদের কোন ভাগে?
আধুনিক যুগে আমি যে নতুন কবি, মনে মনে ভাবি-
আমি তো সত্যই এক যান্ত্রিক কবি।