সবুজ গোলাপ,নীল পদ্ম,লাল অপরাজিতা
কোনটি পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ ফুল?
এই নিয়ে জনে-জনে,রাজ্যে-রাজ্যে,
বিতর্কের প্রবল ঝর বইয়ে যেতে পারে;
প্রেমিকারা বাজি ধরতে পারে এনে দেয়ার জন্য-
তাদের কাঙ্ক্ষিত বীর সুপুরুষ প্রেমিকদের সাথে।
দেবীর পূজার জন্য বীর হনুমানকে দিয়ে
রাম আনিয়েছিলেন দুর্লভ ১০৮ নীল পদ্ম,
তবুও দেবী তার ভালোবাসাওভক্তিরপরীক্ষানিয়েছিলেন,
মেকি ছিল কিনা?
সুকবি সুনীল তার প্রেয়সী বরুণাকেও
ভালবেসে বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে,
এনে দিয়েছিলেন ১০৮ টি নীল পদ্ম ।
তাঁর কারিশমা কি ছিল,
তিনি কিভাবে এ দুর্লভ ১০৮ নীল পদ্ম সংগ্রহ করেছিলেন,
তা আমার জানা নেই।
সম্ভবত ঐ ১০৮সংখ্যাটি অপয়া ছিল,
না হলে এত দুর্লভ বস্তু এনে দেয়ার পরও
কেন প্রেমিকারা সুনিলের বরুণার মত কথা রাখে না?
কেন মনিরের কণ্ঠ অঞ্জনার জন্য বিদীর্ণ হবে,
কিংবা শিল্পী আসিফকে,
তার প্রিয়ার জন্য রাত বিরেতে চিৎকার চেচামেচি করে;
নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে?
যত দোষ সংখ্যার,প্রেমিকাদের কোন দোষ নেই!
সকল বিরহী প্রেমিকই কিংবা তাদের প্রেমিকারাই,
ভালোবাসার পরীক্ষায় সংখ্যা নির্ধারণে;
কোন না কোন ভুল করেছেন!
কেননা সংখ্যার জগতে আন্-লাকি থার্টিন,
লাকি সেভেন ও নার্ভাস নাইনটির মত;
বহু অদ্ভুত ভাগ্য নির্ধারণী সংখ্যা রয়েছে!
লাল,কালো ও সাদা গোলপের নাম শুনেছি,
ইন্টারনেটর বদৌলতে দেখেছিও,
কিন্তু সবুজ গোলাপ!তার নামও এই প্রথম শুনলাম!
যদি কোন প্রেমিকা তার প্রেমিক কে
ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ ,
সবুজ গোলাপ এনে দেওয়ার পরীক্ষায় ফেলে,
নির্ঘাত সে প্রেমিক পরীক্ষায় ফেল মারবে
এবং এক সময় হয়তো রাস্তা মাপতে থাকবে!
নীল অপরাজিতার কথা শুনেছি,দেখেছি-
কিন্তু লাল অপরাজিতা সে আবার কি!
বিশ্ব সংসার কেন,
ইন্টারনেট দৈত্য গুগলকে এনে দিতে বললেও,
ইন্টারনেট তন্ন তন্ন করেও;
একটা লাল অপরাজিতার ছবি দেখাতে পারবেনা!
কিন্তু আমি দেখেছি লাল অপরাজিতা,
কল্পনার রঙে এঁকেছি তার সৌন্দর্য ।
তার সন্ধান কেবল আমি জানি!
স্বর্ণলতা,আমার আশৈশব নায়িকা,
আজন্ম লালিত স্বপ্ন,আরাধ্য নারী,
আমার মনোমন্দির চারিণী দেবী,
আমার প্রেমিকা-যদি শুধু কোনদিন আমায় বলে;
সৈই লাল অপরাজিতা এনে দিতে,
আমি জানি কেবল আমিই তা এনে দিতে পারব।
আর কেউ পারবেনা,কেউ না।
আমিই পারব সুনিপুন কৌশলে দেখিয়ে দিতে
কোথায় আছে লাল অপরাজিতা,
কোথায় ফোটে সে দুর্লভ ফুল?
তার পূর্বে আমি প্রিয়াকে বলব,হে প্রিয়ে
তুমি কখনো সংখ্যা চেওনা,
ভালোবাসায় কোন সংখ্যা রাখতে নেই।
সংখ্যা দিয়ে ভালোবাসা পরিমাপ করা যায় না।
আমার চেনা একটি লাল অপরাজিতাই আছে ভবে।
তুমি এর বেশি আর চেওনা।
তোমার যদি লোভ না থাকে,
আর সত্যিই যদি মমতা মাখা ভালোবাসা
তোমার হৃদয়ে আমার জন্য বসত করে,
তবেই তোমাকে আমি দিতে পারি-
আশ্চর্য দুর্লভ লাল অপরাজিতার সন্ধান!
এ দুর্লভ বস্তুর জন্য দূরে কোথাও যেতে হবেনা,
সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিতে হবে না,
লাগবে না কোন সোনার কাঠি,রূপার কাঠি।
কোন দৈত্য বা রাক্ষস ও ভিলেনের সাথে
যুদ্ধ করতে হবে না,
হাজার বছর ধরে জীবনানন্দের মত হাঁটা লাগবে না,
কিংবা সুনীলের মত হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে
দুরন্ত ষাঁড়ের চোখে লাল ফিতে বাঁধতে হবেনা।
কিন্তু খুলে দিতে হবে চোখের যত বাঁধন,
উন্মুক্ত করতে হবে যত সোনা,দানা,আভরণ
ভুলে যেতে হবে নারী হৃদয়ে আশৈশব লালিত যত লাজ,
শক্ত বাহু বন্ধনে আবদ্ধ করতে হবে আমায়,
মিলিত হতে হবে শাস্ত্র বদ্ধ চেতনায়,
হারিয়ে যেতে হবে চির চেনা বিছানায়।
তবেই অতি নিকটে পাবে এ ফুল,
দেখবে তোমার অতি কাছে,
কিংবা তোমাতেই ফুটে আছে সে ফুল!
সবাই সে ফুল চিনে না,
সবার সে জহুরী চোখ থাকে না প্রিয়ে।
আমি দেখিয়ে দেব তোমায় প্রিয়ে,
আমি জানি এ ফুল ফোটার লগ্ন কোন ক্ষণে?
কেবল আমিই জানি,
কিভাবে ফোটাতে হয় এ দুর্লভ ফুল!
কিভাবে চালনা করতে হয়,
এ দুর্লভ লাল অপরাজিতা ফোটার তন্ত্র-মন্ত্র?
এ ফুল সবাই একসাথে দেখতে পারেনা,
ইহা দেখতে হয় জোড়ায় জোড়ায়,
নির্জনে অনেক আয়োজন করে।
এ ফুল দেখার জন্য শক্তির প্রয়োজন নেই,
দরকার আবেগ,ভালোবাসা,সোহাগ,
পারস্পরিক সহযোগিতা,মানবিক উৎকর্ষের সর্বোত্তম চেষ্টা
ও সৌন্দর্য পিপাসু বুদ্ধি দীপ্ত দৃষ্টি।
ভালোবাসার দৃষ্টিভঙ্গি পরাস্ত করে-
সকল দূরত্ব ও প্রতিবন্ধকতা,পাথরে ফোটায় ফুল!
মাকে ভালবেসেই মাতৃপরিভ্রমন করে,
গজানন গণেশ ব্রমাণ্ড ঘুরার পুরস্কার লভেছিলেন।
পরাস্ত করেছিলে দৃষ্টি জ্ঞানে ,
পরম পরাক্রমশালী ক্ষত্রিয় বীর ময়ূরাসীন সুদর্শন কার্তিক কে।
দৃষ্টি জ্ঞানেই পরমহংসদেব রমণী স্ত্রী কে,
নিয়েছিলেন কুমারী জ্ঞানে!
ভালোবাসা আর দৃষ্টি জ্ঞানেই সম্ভব
সৃষ্টি যত শৈল্পিক নিদর্শন!
হে প্রিয়ে, আমিই হতে চাই তোমার জীবনে-
লাল অপরাজিতা ফোটানোর একমাত্র শৈল্পিক কারিগর।


28/10/2014
12:22am