আম‌ি সংসারী নই, ঘর আমায় টানেনা, এই-
ছোটাছেড়া জীবনের দাসখতও কেউ লিখে নেয়নি।
অনুভূতিগুলো সব বেনামী কাব্য গীতি হয়ে বেহাগের সুরে বাজে, রাতের পর রাত।
ক্ষীয়মাণ ইচ্ছেরা দাগি আসামী হয়ে-
আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে, শেষ বিচারের আসায়।
দিবা-নিশি এমনই কাটে।
-স্বর্গ থেকে বিতাড়িত প্রাণ আমি,
বাসা ভাঙা ক্লান্ত পাখির মতো ঝড়ের কাছে নিই আশ্রয়।
স্বপ্ন জেগে থাকে। যে কথাগুলো শব্দ পায়না, তারা-
একাকিত্বে মুক্তি পেতে চায়।
বৃষ্টির শেষে মনে পড়ে, এই যা! ভিজে গেলাম!
-আমার বিত্তহীন চোখের জ্যোতি আঁধার ভেদি যে আলোর দেখা পায়-
সেখানে নিজেকে দেখিনা, প্রতিফলিত হয় শুধু তার ঝলমলে বসন আর-
কঙ্কনের চোখ ধাঁধানো আলোকচ্ছটা।
স্বপ্নভরা বুকের উপর দু-হাত চাপা দিয়ে ভাবি, সে ভুল… কেবলই ভুল।
-আমি নিঃসের মতো সর্বস্ব বাজি রেখেছি, শুধু-
একটি গোলাপ ফোটাতে, ফুটেছেও হয়তো।
এখন নিজের হাতেই শরীরের তাপ অনুভব করি,
অনুভূত হয় ক্ষুধা, তৃষ্ণা, সব…
-কালের আবর্তে জীবনের ভিত সে-
পাখির নীড়ের মতো জটিল, ঝড়ের পীড়নে দোল খায়
তবু ভেঙে পড়ে না।
-কতদিন মানুষের ভিড়ে হারিয়ে গেছি, সবাই
ঘরে ফেরে, পৃথিবীর চোখ ফাঁকি দিতে পারিনা,
সে ঠিকই খুঁজে নেয়, আমিই অবশিষ্ট।
আমি ঘূর্ণির পায়ে পা রেখেছি হারাবো বলে, সেও থেমে যায়।
বনফুলের বিবিধ গন্ধে উড়িয়ে দিয়েছি ব্যথার অমনিবাস।
ভ্রমর কে উপেক্ষা করে রাতের রানীর ঝরে যাবার শব্দ শুনেছি।
দেখেছি ছায়াপথের কালো অন্ধকারে সূর্যের ব্যর্থতা।
মাঝে মাঝে সব ভুলে যায়; প্রথম শব্দও মনে পড়ে না,
তখন অ-এ অজগর থেকে ম-এ মা পর্যন্ত গুনে চলি।
-পাখির ডানায় কোনদিনও বিশ্বাস রাখিনি, শেষে দেখি;
এতদিন ক্ষরায় তেফাটা মাটিতে অঙ্কুরোদ্গমে বীজ বুনে গেছি।
এই কি প্রতিদান! এই কি প্রাপ্য আমার!
শানাই এর ফুঁৎকারে জ্বলে ওঠে, পাথরে পাথরে ঘষা গনগনে আদিম আগুন ব্রহ্মাণ্ড জ্বালিয়ে দিতে।
বিজয়ের দ্বার থেকে বহুবার ফিরে গেছি,
চোখের ভাষা বুঝিনি, পুরস্কার নয়, একটু জায়গা যদি পেতাম…
এখন নিজের ছায়া দেখেও খটকা লাগে মনে, সেকি সত্যি!
নাকি আমার আরেকটি ভুল!
-যখন ক্ষুধায় কাতর শিশুর মতো “মা…” বলে কোঁকিয়ে উঠি; তখন-
ইচ্ছে করে দু-হাতের পেষণে পৃথিবীটাকে ত্রিকোণ অথবা লম্বা করে ফেলি।
এমন করেই বাঁচি, এই আমার মুক্তি।
-এখন জ্বর হলে বড্ড ভয় করে,
যে সত্যিটা লিখবো বলে পূণরতি চশমার কাঁচ মুছে চলেছি, তা-
লেখার সময় পাবো তো! অবশ্য-
মৃত্যুর আনন্দও থাকে।
কি হবে এসব লিখে!
কারো অফুরন্ত অবসরের কালক্ষেপণ, কিংবা অভিলাষ।
হে মালিক, তুমি আগুন জ্বালো অন্তিম রক্ত বিন্দুতে,
ব্যথায় নীল হয়ে যাক -এ তনু, তবু, তুমি খুশি হও।