এই কবিতার আসর সৃজনশীল কবি-সাহিত্যিকদের প্রতি এক আশীর্বাদ । তথ্য পড়ে জানলাম পাঁচ হাজারেরও বেশি কবির প্রায় এক লক্ষ কবিতা এই আসরের প্রাপ্তি ।
   আমি বলব,  বাংলা সাহিত্যের প্রাপ্তি । এমন একটি মহৎ কাজের জন্য মহামান্য এডমিনের কাছে বাংলা সাহিত্যজগৎ অবশ্যই ঋণী থেকে যাবে । এই লক্ষ কবিতার সিংহভাগ মহামান্য এডমিনের সৌজন্যে বা পরোক্ষ প্রেরণায় সৃষ্টি । পৃথিবীর সাহিত্যের ইতিহাসে এ এক অনন্য নজির। মহামান্য এডমিনকে  আমার সশ্রদ্ধ অভিনন্দন জানাই ।  
  আমি এক সময় এই আসরেও নানা ছদ্মনামে নামে কবিতা পোস্ট করেছি । আমার অভিজ্ঞতা বলে, নিয়মিত কবিতা পোস্ট করলে একজন কবি নানাভাবে লাভবান হয়ে থাকেন । এমন কী সৃজনশীলতার দ্রুত বিকাশ হয় ।  কবিতা লেখায় গতি আসে । অনেক কিছু শেখা যায় । নিয়মিত কবিতা পাঠের অভ্যাস গড়ে ওঠে ।


  প্রায় ছ’হাজার কবির মধ্যে বয়স্ক, অল্প বয়স্ক এমন কিছু কবি আছেন যাঁরা রীতিমতো শক্তিমান । বাংলা সাহিত্যজগৎ যাঁদের অবদানে সমৃদ্ধ হয়ে চলেছে । এঁদের কবিতা পড়লে অন্ধকার মন আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে ।


   সকলের কথা স্বীকার করে নিয়েও বলি ২০১০ খ্রীস্টাব্দের পর,  এপার ও ওপার বাংলায়  যাঁরা লেখালেখি শুরু করেছেন, ব্যক্তিগতভাবে মনে করি তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন কবি  
“হাফিজুর রহমান বিপ্লব”। যাঁকে আপনারা “ইথার”, “অতিরঞ্জন”  “অর্চিষ্মান” “চারুনেত্র চিত্রাকর্ষক” ও আরও কয়েকটি ছদ্মনামে চেনেন ।
  যতদূর জানি ইথারের লেখা-লেখির বয়স মাত্র দু’বছর । একজন কবির কাছে প্রাথমিক দুবছর নেহাতই নগন্য সময় । কিন্তু কোনও কবির প্রাথমিক পর্যায়ের কবিতা, অন্তত আমার মনে হয়, ইথারের কবিতার মতো  এতটা ভাষাগত, কাব্যিক-বোধে ও গুণগত মানে সমৃদ্ধ ছিল না । সেদিক থেকে ইথার একেবারে ব্যতিক্রম ।
  ইথার যদি কবিতা রচনায় নিজেকে আগামী ১৫-২০ বছর নিয়োজিত রাখে বাংলা-সাহিত্যে একটা অন্য দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে । এটা আমার ব্যক্তিগত অনুমান বা বিশ্বাস ।
  আমি এত কথা বলছি তার কারণ এই যুবক কবি খুবই অভিমানী ও আবেগ-প্রবণ । নানা কারণে এই আসরে ওকে আঘাত পেতে হয়েছে । ওকে এই আসরের যেমন দরকার তেমনই বাংলা সাহিত্যেরও দরকার ।
  দু’পার বাংলার প্রকাশক, কাব্য-বোদ্ধা, পত্রপত্রিকার সম্পাদকদের কাছে একটি আবেদন রাখা যায় আপনারা এই কবির গতি-বিধি নজরে রাখুন ।  সুযোগ থাকলে পৃষ্ট-পোষকতা করুন । যাঁরা প্রকাশনা–ক্ষেত্রে আছেন তাঁরাও হাফিজুরের কবিতা প্রকাশের কথা ভেবে দেখতে পারেন ।  
  এই আসরের কবি ও পাঠকের কাছে আমার আবেদন ইথারের কবিতা পড়ুন । ভালো লাগলে কেন ভালো লাগল বলুন । কবিতা খারাপ লাগলে কেন খারাপ লাগল তাও বলুন ।  নির্মমভাবে সমালোচনা করুন ।


  একটা কথা আমি ইথারকেও বলেছি কবিতা যেন দার্শনিকতা ভারাক্রান্ত না হয়ে পড়ে । কবিতা পড়ে যেন না মনে হয় কবি তাঁর লব্ধ জ্ঞান ও পাণ্ডিত্য কৌশলে প্রকাশ করে চলেছেন । কবিতা হবে নিস্তব্ধ দুপুরের ছায়া-শীতল দিঘির মতো । ওপার গাছ-গাছালিতে রহস্য-শ্যাম । দিঘির পারে দাঁড়ালে স্নান সেরে নিতে ইচ্ছে হবে । আবার গভীরতা কতটা না জানার জন্যে একটা শঙ্কা আর বিস্ময় আচ্ছন্ন করে দেবে ।
  ইথার পুরাণ-দর্শনের মোহ অতিক্রম করে অল্প দিনের মধ্যেই অন্য স্বাদের কবিতা আপনাদের সামনে নিয়ে আসবে বলেই আমার ধারণা ।
কবিবন্ধুদের শুভেচ্ছা ও নমস্কার জানাই  । সকলেই ভালো থাকুন । ভালো ভালো কবিতায় আসর সাজিয়ে তুলুন ।  
ধন্যবাদ ।