তেজ পাতার তেজ কতটা আছে, তার কি জানি !
তবে একটু হলেও যে এদের, দাম আছে, তা মানি।
তাই একদিন, ছেলেকে স্কুল থেকে আনার সময়, যাবার পথে, মালি দাদার কাছ থেকে এইটুকুনি,
এক তেজপাতার চারা গাছ, চল্লিশ টাকায় কিনি।
গাছটাকে নিয়ে রিক্সা করে যখন স্কুলে পৌঁছে যাই,
ছেলেদের মায়েরা আমার কান্ড দেখে অবাক সবাই।
হেসে বলে,"তেজপাতা কিনতে হবে না আর ! আর,
আমাদের তেজপাতা কেনার, কোনো প্রয়োজন নেই,
তোমার বাড়ি চলে যাবো তেজপাতার দরকার হলেই"
আমি কথাটা শুনে মনে মনে সত্যিই বেশ খুশি হই,
মুখে হেসে বলি, "নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই, যাবে অবশ্যই!"
না হয় খরচ হলোই বছর খানেকের তেজপাতার দাম,
শুনেছি এই গাছের নিচে খেলতো গোপাল ও সুদাম।
নতুন মাটিতে গাছটা বেশ তরতরিয়ে বেড়ে ওঠে,
বছর দুই, তিন পরে দেখি, এ গাছে ফুলও ফোটে।
নতুন পাতা হলে দেখে মনে হয়, গাছটা যেন হাসছে,
নিচের দিকের ডাল পালা কেটে উপহার দিতে গেলে,
প্রতিবেশীরাও দেখি বেশ হাসি মুখে কথা বলছে।
স্কুলের ছেলের মায়েরা আসতো বছরে দুই এক জন,
তবে তেজপাতার কারণে নয়, না দেখে মন কেমন !
বরং আমি কখনও কারো বাড়ি গেলে,যদি মনে পড়ে,
হয়তো কিছু তেজপাতা নিয়ে যাই,ক্যারি ব্যাগে ভরে !
বুঝিনা এমন তুচ্ছ জিনিস পেয়ে অনেকদিন পরে,
খুশি হয়, নাকি আমার সাথে দেখা করতে পেরে !
ধীরে ধীরে কোথা দিয়ে কেটে যায় বেশ কয়েক বছর,
এখন হয়তো সকলেই মন দিয়ে করছে ওরা সংসার !
একের সাথে অপরের দেখা হওয়া আজ সত্যিই ভার,
কয়েক বছরের বন্ধুত্বের কথা কে মনে রাখে আর !
তেজপাতা বিক্রি করিনি, ওরা যে বাগানের বাহার।
আশা করি মনে মনে,যদি আসে কোনো বন্ধু আমার !