আমি একটু হালকা রঙের উজ্জ্বল শ্যামকান্তি,
আমার পরিবারে সদা বিরাজমান অপার শান্তি।
আছে প্রায় গন্ডা দুই খোকা খুকু আর তাদের মাতা,
গৃহিণী আমার বেশ শান্ত শিষ্ট, শুধু একটু গরম মাথা।
রঙটি তাহার কুচকুচে কালো, অতি মনোহর সুন্দরী,
আমার ওপর তার বড়ই ভক্তি, ভালোবাসেন ভারি !
সংসারের খেয়াল উনিই রাখেন,শিশুদের দেখাশোনা,
কালো বৌ আমার বড়ই ভালো, একদম সোনামনা !
ঝুপড়িতে শুধু যে থাকতে দেয় আমাদের তাই নয়, দেয় গরম ভাতের সাথে ফ্যান ও সবজির খোসা !
মানুষের কাছে পাওয়া, আমাদের পরম ভালোবাসা।
তাই ঝুপড়ির ঐ হারু, মুংলি আর ওদের মা ও বাবা,
সকলে মিলে এক বৃহৎ পরিবার, এই তো বুঝি আমি,
আমার নাকি চোখে ঠুলি আঁটা, আমি বোকা হাবা।
আসলে কালো বৌ এসব বলে মন খারাপ হয় বলেই,
বোঝে সে, ছানারা কোথায় যায় একটু বড় হলেই !
একদিন হঠাৎ করে চোখ চলে গেছে হাইওয়ের ধারে,
দুটো লোক মিলে কি যেন করছিলো ঐ দরমার ঘরে।
আমারা নাকি নোংরা,কিন্তু ওখানে দুর্গন্ধে টেঁকা দায়,
চলতে চলতে কি করে যেন ওদিকে চোখ চলে যায়।
নীল আলো, গ্যাস বার্নার দেখি জ্বলছে সেখানে হায়।
দুজনে যত্ন করে ধীরে, এক শুওরের দেহ ঝলসায় !
স্বজাতির নিথর দেহ দেখে প্রাণ ডুকরে ওঠে কান্নায়,
ভাবতে পারো, আমার তো আছে বেশ সুখি পরিবার,
কে মরেছে না মেরেছে , তাতে আর আমার কি দায়!
নিজেদের কথা ছেড়েই দিলাম, করেছি জীবন যাপন,
আমাদের ঐ ছোটো ছোটো ছানাদের কথা ভাবে মন।
ওরা তো ছোটো,ওরা যে শিশু, ওরা একদম অসহায়,
ওদের হাটে বেঁচে দিয়ে তারা মদ খাবে সেই টাকায ।
ওরা অদ্ভুত,"শুওরের বাচ্চা"বলে নিজেরা গালি দেয়,
আবার আমাদের পরিবারের বাচ্চা, মেরে ওরা খায় !