"সকল জাগতিক বস্তুর আছে বিনাশ"
বুদ্ধের মতে, কথাটা না বুঝলেই সর্বনাশ!
জ্যোতিষি গণ রাজা শুদ্ধোধনের ছোট্টো ছেলের,
ছবি আঁকতে চেয়েছিলেন ভবিষ্যত জীবনের।
যেমন খুশি আঁকার স্বাধীনতা বোধহয় ছিলো তাঁদের,
আট ব্রাহ্মণের মধ্যে অসিত নাম ছিল একজনের।
"হয় রাজচক্রবর্তী নয় সিদ্ধ সাধক হয়ে করবেন জয়"
ভবিষ্যত গণনা করে, তাঁর নাকি এমনটাই মনে হয়।
কৌণ্ডিণ্য, যে সর্বকনিষ্ঠ ব্রাহ্মণ আমন্ত্রিত ছিলেন,
তিনি তো অসিতকেও টেক্কা দিয়েছিলেন।
অদৃশ্য কালিতে, ভবিষ্যতের ছবি আঁকার ক্ষেত্রে,
তিনি কি অসিতের চেয়ে বেশি পারদর্শী ছিলেন?
স্পষ্ট বলেন, "এ শিশু ভবিষ্যতে বুদ্ধত্ব লাভ করবেন।"
ভয়ে শুদ্ধোধন,শিশুর দুঃখ দেখার দরজা বন্ধ করেন।
সংসারী করতে মাত্র ষোলো বছর বয়েসে বিয়ে দেন!
শিক্ষা দীক্ষার পাশাপাশি, আমোদ আহ্লাদের ব্যবস্থা,
সুন্দরী স্ত্রী যশোধরা, পুত্র রাহুল, বস্তুগত যত ঐশ্বর্য !
তাঁকে পারেনা সুখি করতে, মুক্তি অন্বেষণ করেন।
মানুষের দুঃখ কষ্ট ছাড়া, জীবনের ছবি আঁকতে চান,
ঊনত্রিশ বছর ধরে তিনি রাজপুত্রের জীবন কাটান ।
পাঁচ,ছয় বছর ধরে নিরলস ভাবে শুধু মুক্তি খোঁজেন।
না খেয়ে থাকলে যে শরীরের বিনাশ হয় তা বোঝেন,
তাই তো সুজাতার তৈরী পায়েস খেয়েছিলেন।
এর পর তিনি মধ্যপন্হার সাধন পথ অবলম্বন করেন,
নৈরঞ্জনা নদীতে স্নান করে অশ্বত্থ তলে ধ্যান করেন।
বোধীবৃক্ষের তলে একদিন সত্যিই বুদ্ধত্ব লাভ করেন!
বুদ্ধধর্ম প্রচার শুরু করেন, ক্রমে বৃদ্ধ ও অসুস্থ হন,
শেষ পর্যন্ত একটা সময় দেহ রাখার পর শিষ্যরা ,
ছবি অভাবে তাঁর চরণ চিন্হ পূজা করা শুরু করেন।
কয়েক শতাব্দী পর যেমন খুশি আঁকো, হলো শুরু !
যত রকম পারা যায় মূর্তি তৈরী হলো গুরুর,
কোথাও খালি গা,কোথাও ভাঁজে ভাঁজে কাপড় পড়া,
কোথাও বা কঙ্কালসার শরীর , একদম মাস ছাড়া !
তবে কোনো মূর্তিতেই কোথাও দাড়ি চোখে পড়েনা।
কিন্তু ধ্যানের সময় দাড়িও তো বাড়ার কথা, তাইনা?