আমাদের এতটুকু ছোট্ট পুঁচকে এই পৃথিবীটাতে,
বালি-মাটির একটা বিস্তৃত মরুভূমি যেমন আছে;
আছে তার চেয়ে অনেক ছোট্টো একটি ওয়েসিস।
অতি দুর্লভ তিনরঙা জল তাতে খেলছে,দিচ্ছে শীস।
আসলে রঙ না, হয়তো জলে কিছু প্রতিফলিত হচ্ছে!
নীল রঙটাই কোথাও গভীর, কোথাও নীলটা হালকা,
কোথাও বা তাতে যেন হালকা সবুজের আভা।
চারিধারে তার দাঁড়িয়ে, কিছু খেজুর গাছের সারি,
আছে আরো কিছু গাছ, লম্বা, সরু, সোজা, খাড়া !
ছোটো কিছু কিছু ঝোপ, কিন্তু নেই কোনো বাড়ি।
উটের ছানার সাথে ওর মাতা বা পিতা আসে তাতে,
জল খেতে আর ওয়েসিস দেখে মন ভালো করতে,
হয়তো সেই ফাঁকে ওদের পরিবার চায় বিশ্রাম নিতে।
কিন্তু তাদের সকলের মনে রয়েছে দুঃখ একটাই,
এসব গাছেদের তলায় ছায়া নেই একেবারে প্রায়।
যদিও বা অল্প স্বল্প ছায়া কোথাও কখনও থাকে,
ঐটুকুতে কি আর ওদের অত বড় শরীর ঢাকে !
এখানকার ধুসর আকাশের কোত্থাও কোনো কোনে,
কোনো রকম মেঘ দেখা দেয় না, সাদা কিংবা কালো।
গাছ, বালি, উট, ইঁদুর কিংবা সাপ কেউ জানে না,
বৃষ্টির ফোঁটার মিষ্টি স্বাদটা,খেতে ঠিক কতটা ভালো !
আরও আশ্চর্য যে, তিনটে বক মাঝে মাঝে উড়ে যায়,
না আছে মাছ, না ব্যাঙ,গেঁড়ি,গুগলি কিছুই তো নেই!
কি জানি ওরা কেন যে ঘুরে ফেরে, কিসের আশায়।
হয়তো মনে ভাবে, একদিন ঠিক আসবে মেঘের দল,
এখানেও হয়তো কখনো বাদল ফাটবে, ঢালবে জল।
চারদিকের রুক্ষ,শুষ্ক,ঊষর বালি নিমেষে কাদা হবে,
এখানেও ধীরে গজাবে ঘাস, জমিতে ফসল ফলবে।
মানুষের তৈরি কুঁড়ে ঘরে খোকা খুকু রা খেলা করবে,
বড়দের মুখে কাগা-বগা দের গল্প, মন ভরে শুনবে।
কিন্তু তখন লোকে, এই ওয়েসিসকে দিঘী কি বলবে ?