কাঁচা মরিচ আর কৈ মাছের নাকি বন্ধুত্ব হয়েছিলো,
একজন জলে আর একজন স্থলে বেশ ভালোই ছিল।
দুজনেই জানতো মরণের কালে দেখা হবার বার্তা,
তাই হয়তো ওরা নিজেদের প্রবোধ দিতে পেরেছিলো,
ছিল নিশ্চিন্তে, মনে ছিল তাদের অপরিমিত স্থিরতা।
শুনেছি, কৈ মাছের জান নাকি খুব শক্ত পোক্ত হয়,
পুকুর ছাপিয়ে জল যখন বেরিয়ে যায় ভরা বর্ষায়!
মাছের পরিবারের সকলেই সেই সময় একজোট হয়,
সেই সুযোগে উজান স্রোতে লাফিয়ে পালায় কৈ।
মরণের পর নয়,বন্ধু সুজন মোরা তো বেঁচে থাকতেই,
রত্না পলাকে বলে, তোর আমার তো এক দেহে বাস,
কেন ভাই আমাকে পেছনে ফেলে, একা আগে যাস ?
আমি তো তোর সুরেই, বিখ্যাত কবিদের লেখা বলি,
তোর চেয়ে ঢের ভালো লিখেছেন, কি করে ফেলি ?


ও এই কথা ! আমার আর কি এমন দোষ বল তাতে,
খিদের মুখে লোকে তাই খায়,যা পায় সামনে পাতে।
কবি সুকান্ত তো চাঁদকে ঝলসানো রুটি বলেছে,
আসল রুটি , অনেকের নাগালের বাইরেই আছে।


গানের আড়ালে পরাণের গহীন ভিতর যে সুর জাগে,
"আফ্রিকা"র অরণ্যে আমাজন নদীর শেষ খেয়ায়,
অজানা অচেনা "আতাচোর" প্রাণপনে ভাগে।
ধরা পড়বার পর "তোমার চোখ এতো লাল কেন ?"
একথা জিজ্ঞেস করে, এখন আর কি লাভ হবে ?
যাদের রাত জেগে লেখাপড়ার দরকার তারা জাগবে,
ইচ্ছে হলেই তোর বলা কবিতা খুঁজে নিয়ে শুনবে।


"অনন্ত জীবন যদি পাই আমি" সৎকার গাথা গাইব,
তা শুনে "সেই দিন এই মাঠ স্তব্দ্ধ হবে নাকো" জানব।
লিচুচোর নাকি আর কোনোদিন কিছু চুরি করবেনা,
কথা দিয়েছে সে কবে?কোনদিন? চিঠি লিখে কাকে?
"না পাঠানো চিঠি" নিয়ে "প্রেমিক" রাখে তা বুকে।
তাই দেখে "ভাঙাচোরা চাঁদ মুখ কালো করে ধুঁকছে",
অথচ, কত কবি কবিতায় চাঁদকে ভালোবেসেছে!
বাংলা কবিতার পাতাগুলো কি আর চাঁদে পৌঁছেছে?
"বেদের বহর" তো কাল উড়ালখালির ঘাটে ঠেকেছে,
চাঁদটা কি "সোজন বাদিয়ার ঘাটে" জোছনা ছড়াচ্ছে!


তোর জন্যে আমি উৎসর্গ করলাম এই কবিতাখানি,
আজ পাঠ করবোনা এটা, ওরে আমার অভিমানিনী!
রাগ করে থাকিস না সই, ভালো করে বুঝে নে তুই,
দরকারি কথাগুলো তো বলেছি ধাঁধার মতো করেই !
সবই দিলাম বলে, "আমার কৈফিয়ৎ" শুধু এইটুকুই ।