আমায় কবি বলো নাকো তুমি,
আমি নইকো কবি সুমহান।
স্বপ্ন আমার ক্ষুদ্র এত,
তব হৃদয়ে দিয়গো স্থান।

এইটুকু মোর আশা ওগো,
যেন বাঙালীর গান গাই;
এই বাংলায় জন্মগো মোর
এইখানেই মিশে যাই।

এইখানেতেই চাতক উড়ে,
খুঁজে ফেরে মাছ জেলে।
কৃষক এখানেই চালায় লাঙল,
সাঁঝে বধু ছিপ ফেলে।

এখানেতেই তপ্ত রোদে
উত্তপ্ত ধরা;
বর্ষায় হেথায় নাচে ময়ুর;
শান্ত হয় জ্বরা।

আশ্বিনে যখন শিউলি ফোঁটে,
সাদা হয় কাশ বন;
ঢাকের বাদ্যি বেজে উঠে,
নৃত্য করে মন।

এখানেতেই রোজা শেষে
পায়েস-পিঠে হয়;
ঘটা করে এখানেতেই
নবান্নের জোয়ার বয়।

সোনার ফসল ঘরে উঠায়
ভাটিয়ালি গানে চাষী;
পৌষ-পার্বণ এইখানেতেই
পুলি-মালপোয়া-লুচি।

হিমের পরশ আসে যখন,
ধরনীর ধাত্রী বেয়ে-
রূপলী রঙে সকাল জাগে,
মুক্তোয় ঘাস ছেয়ে।

বসন্তের ঐ হিমেল ছোঁয়া
মৃদু-মন্দ হাওয়া।
চড়ক মেলায় গাজন নৃত্য
যায় সেকি কভু ভুলা?


বাংলায় আমার জন্ম ওগো
আমি গর্বিত বাঙালী
বাংলার মাঠ, বাংলার ঘাট,
এই মাটিতেই যাই চলি।