রুক্মিণী


পরিবার সে ছিল সুখী এক
সবুজ বনের পাহাড় কোনে
ঘর যে ছিল এক
তার - ই মাঝে তিনটি প্রাণী স্বপ্ন বোনে।


বাগান ঘেরা ছোট্ট বনের
স্বপ্নবোনা দেশ
খেয়াল খুশির নেই সীমানা
স্নিগ্ধ পরিবেশ।


চা বাগানের সবুজ কুড়ির
শিশির ভেজা ভোর।
রাত পোহাতেই ছুটত সবাই
মিলিয়ে পায়ের সুর।


চায়ের কুড়ি তুলতে তারা
গাইত মিলে গান
টুসু পূজায় মাতিয়ে দিতে
হামদেরই বাগান।


রুক্মিণী তার একটি ছেলে
মরদ নিয়েই বাঁচে।
সুখে-দুঃখে ছোট্ট নীড়ে
থাকতো দোয়ের কাছে।


রাত পুহালে রুক্মিণী সে
উঠত সবার আগে।
খাইয়ে-দাইয়ে বাপ-বেটাকে
ছুটত নিজের কাজে।


এমনি করেই জীবন তাদের
কাটছিল বেশ সুখে।
দিনের বেলায় মনের সুখে তুলতো কচি কুড়ি
রাত কাটাতে শুয়ে স্বামীর বুকে।


একদিন তার ছোট বোন
আসলো ঘরে উঠে!
বোনের মরদ মার মেরেছে
তাই সে গেছে রুঠে।


মনের দুঃখে রুক্মিণী আজ
কাঁদছে দুঃখী হয়ে।
বলছে তারে ভয় পাবি না
আমরা আছি দোয়ে।


তোর বোনের বেটা একলা থাকে
থাকবি দুদিন কাছে।
মরদ তোর আসবেই চলে
নামলে দিমাগ পাছে।


এমনি করে চললে বহুদিন
মরদ বোনের হারিয়ে গেল
কাটল মাসেক তিন-তবুও বোনের
মরদ নাহি এলো।


সহজ সরল রুক্মিণী সে
বোনকে দিল ঠাঁই
ভাবতো না সে নিজের কথা
নিজের জীবন ছাই।


বাপ মরা সে বোনটা আমার
ভাবতো একা বসে।
বোন যে উহার পাঁচমিশেলি
জানতো না কভু সে।


একদিন কাজের শেষে ফিরলে ঘরে
রইল দাওয়ায় বসে।
নিজের মরদ বোনের হল
নিজের কপাল দোষে।


কাঁদলে বসে মনের শোকে
বেটার গলায় ধরে
বাঁচতে হবে বেটার লাগি
মায়ের কাজটা করে।


ভাদর বাদে আশ্বিন মাস
দুর্গাপূজা এলো
মরদ শোকে কাঁদলো ভাসি
মরদ নাইকো এলো।


পিকলু চন্দ
১৭.০৬.২০২০