"এক এক করে সারা দেশে অনেকগুলো শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চলল, ছুটল ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ও গন্তব্য বিহার,ঝাড়খন্ড। কোভিদ -১৯ এর হাত থেকে মুক্তি পেতে পরযায়ী শ্রমিকদের পৌছে দেয়াই একমাত্র রাস্তা। কাজের শেষে শ্রমিকদের কি প্রয়োজন আপদ বিদায় করলেই বাঁচি তারপর তারা যদি আবার ভিন রাজ্যের হয় তখন তাদের নিয়ে ভাবা তো প্রশ্নই ওঠে না। যেমন কথা তেমনি কাজ রাজের আদেশে রেল কর্তৃপক্ষ অনেকগুলো শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালালো আমিও সাক্ষী হয়ে রইলাম ইতিহাসের।
ঝারখন্ড বিহার থেকে আসা ইট ভাটা তে কাজ করা অত্যন্ত গরিব শ্রেণীর মানুষ এরা তাদের অবস্থা খুব করুন । প্রতিবছর ঠান্ডার মরসুমে তাদেরকে নিয়ে আসে আবার বর্ষার আগে পৌঁছে দেয় ঘরে। তাদের নিয়ে চলে হাতবদলের ব্যবসা। সবাই দেখে বুঝে কিন্তু কোনদিন কেউ কিছু বলেনা তাদের হয়ে। এবার প্রথমবার দেখলাম তাদের পৌঁছানোর জন্য গাড়ি করা হলো, কেটে রাখা হলো মাথাপিছু দাম কিন্তু মালিকরা সি এম আর পি এম ফান্ডে টাকা জমা করে শ্রেয় নিয়ে পূর্ণ করল মানবিকতার দায়িত্ব। শ্রমিকরা কনফার্ম সিটের সৌভাগ্য নিয়ে জীবনের প্রথম ফিরল ঘরে টাকা দিল রাজ।
কবি সুকান্তের ভাষায়
'হাতেতে টাকার বোঝা
তবুও টাকাকে যাবে না ছোঁয়া'
মনে হল ডাক      হরকরা আর শ্রমিকরা যেন জীবনের একই ফ্রেমে বাঁধা।
যে শ্রমিকরা পেটের জন্য এতদুর থেকে আসে তাদের হাতে একশো গ্রামের এক পোটলা মুড়ি সাথে দু'চারটে বাতাসা এক প্যাকেট 5 টাকা দামের বিস্কুট আধা কিংবা এক লিটারের বোতল জল । মাথায় বোঝা সাথে পরিবারের লম্বা লাইন নিয়ে চাপল ট্রেনে অবশ্য সোসিয়াল ডিস্টেন্স বাইরে মেন্টেন ছিল ট্রেনে উঠলে তার দরকার পড়বে না।রাস্তায় রেলের পক্ষ থেকে আইআরসিটিসি খাওয়া দেবে এই প্রত্যাশা নিয়ে ছুটলো গন্তব্যের দিকে, শ্রমিকের লিস্টি হাতে নিয়ে ধর ধর মার মার কাট কাট করে চালানো হলো ট্রেন। 'ফুড সাপ্লাইড ' লিস্ট এ আমিও বেশ সহি মোহর করে দিলাম। এর বাইরে উপায় ছিল না গাড়ির জন্য সিটের হিসাবে ভাড়া নেওয়া হয়েছে রাজের অধিকারী যাই বলবে তাই সঠিক। নতুবা ভয় আছে রোগ যদি ছড়িয়ে যায়। আমাদের দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নারা দিয়েছিলেন গরিবি হটাও আজ তাদেরকে দেখে মনে হয়েছে সত্যি গরিবি উঠে গেছে থার্ড ক্লাস থেকে সেকেন্ড ক্লাস এবার তারা স্লিপার ক্লাসে রিজার্ভ কামরাতে চলছে সত্যি দেশে আর গরিবি নাই গরীব হটে গেছে। শ্রমিক নিয়ে লিখেছি কিন্তু মন ভরে নি আজ হালকা লাগছে"।


শ্রমিক স্পেশিয়াল


কাজলা দীঘির মাছের মতন
খাঁচায় বন্দী করে,
আনলে তাদের সাজিয়ে মোহন
চুরের মতই ধরে।


ধরিয়ে দিয়ে এক চালান হাতে
মুড়ির পটলা দিয়ে
কড়া পাহারার সারি ডিঙিয়ে
চাপলে ট্রেনে গিয়ে।


যত হুজ্জোতি চাইলেম দেখে
সিলমোহরের হাটে
রোগের বাহানা করে আনাগোনা
বিকলো হাজার বাটে।


দায়সারা আজ রাজের প্রহরী
রইল না ফাঁকা কিছু
যাদের দৌলতে সমাজের মান
(তাদের) বাঁচলে না মান কিছু।


পরিযায়ী শ্রমিক ছুটলো ঘরে
ক্ষিদের জ্বালা সহে
(যেনো) গরীব মিটিয়ে গরীবি হটাও
গিয়েছে সে রাজ কহে।


পিকলু চন্দ
১৯.০৬.২০
এখানে,
রাজ/রাজের> সরকার
মোহন> সুন্দর,বা মনোহর
নারা> স্লোগান।