একটা গল্প বলি , শোনো ।


সেবার হোলো কী কাণ্ড !!
গিয়েছিলাম পিকনিকে --
বন হুগলীর ঐ দিকে ।
বলবো সে ভাই কী কাণ্ড !!
বাঘ বেরুলো প্রকাণ্ড !!


বাঘ বলল , মাংস চাই !
হরিণ শুয়ার এমনি পাই ,
মন চাইছে আজকে তাই
মানুষ টানুষ একটা খাই !


বুলটি ভাবীর ঠাকুর ঝি
বললো , বাঘা বলিস্ কি ?
আজ শনিবার ,নয় আমিষ।
চাইলে নেহাৎ , খাস্ সি-ফিস !


বাঘ বলল , মোটেই না
বাহানাতে ভুলছি না
আমার কেবল মানুষ চাই
রোগা , মোটা যাহোক্ ছাই !
বুড়ো বুড়ি চলবে ভাই !


মনটা ভালো ঠাকুর ঝি'র
বলল,
আচ্ছা বাবা , বোস্ না থির !
বড্ড খিদে পাচ্ছে কি ?
একটুখানি বোস্ দেখি !
মাংস কাঁচা খায় না কি ?
রান্নাটা নয় চাপিয়ে দি' !!


বাঘ ভাবলো ,মন্দ কি !
একটু নাহয় চুপ থাকি !


হাড্ডি ছাড়া তুলতুলে
মাংস পাবো ঝাল ঝোলে
খাওয়া যাবে প্রাণ খুলে !


বাঘ বসল পাত আড়াল
ঐ যেখানে একটা খাল
সেখান এক ঝোপ ছিল
টোপটা ব্যাটা খুব খেলো ।


দলে ছিল ঠানদিদি
আয়ু বাকি , তাই বিধি
নেন নি তুলে অদ্যাপি ;
জিজ্ঞাসিলে বয়স তার
কৌশলেতে যান চাপি' !!
বুড়ির বয়স চার কুড়ি
চুল পেকে তার শণনুড়ি ।
মুড়ি খেয়েই রাত কাটায়
ভাত রাঁধে না রোজ ই প্রায়
হাতের কাছে যা পায় , খায় !


বিধবা সে এমনিতেই
বাঘ পড়েছে শুনলো যে ই
বুদ্ধি এল মাথায় তার
বাঘ যেন হয় পগারপার !


চাললো বুড়ি ভীষণ চাল
আনল ভেঙে নিমের ডাল ,
বললো ডেকে , ' ঠাকুর পো ,
পারিস্ যদি আনিস্ তো
মিরচি ক'সে ঝাল দেখে
বাঘকে দেবো ভাত মেখে ।


বাঘের তো আর সয় না তর
বলল , তোরা যাহোক্ কর
চটপট কর্ ! নাহয় মর্ !!
পেটে মারে ছুঁচোয় ডন
বসে বসে পা কনকন
তখন থেকে করছো কি
যা হয়েছে দাও দেখি !!
বুড়ি বলল ,
চিল্লোস্ না ,বাপরে বাপ্ !
তোর যে শুনি পেট খারাপ
হালুম হুলুম না করে
থাক্ না বসে চুপ মেরে !
এক্ষুনি দি ই ভাত বেড়ে ।


রেঁধেছি আজ থোড় বড়ি
হাড্ডি দিয়ে চচ্চড়ি !
মানুষ এখন কোথায় ভাই
যুগ কি আছে তেমনটাই ?
যা রেঁধেছি দ্যাখ খেয়ে
ফিডব্যাক দিস্ ঘর গিয়ে !


ঝোপ ছাড়িয়ে ডানদিকে
যেই দেখেছে ঠান্ দি'কে
ন্যাজ গুটিয়ে হাত জুড়ে
পড়ল ব'সে ঠ্যাং মুড়ে ।
বলল বাঘা পায় ধরি
আর খাবো না চচ্চড়ি ।
হাড্ডি ভেবে যাই চিবোই
নিমের তেতো কেবল পাই
মরিচ ঝাঁপির মিরচিতে
মুখ জ্বলছে আর কি খাই !!
অমন খাবার কি দরকার
আমি বরং বনেই যাই !!
জায়গাটা মোর খুব চেনা
দেখছি গিয়ে এক্ষুনি
হরিণ টরিণ পাই কি না !