নিত্য নতুন নিয়মের বেড়াজালে,
লাজুক,কমনীয় কবিতারা দিশেহারা।
বৃত্ত আর ছন্দ বিশ্লেষণের গোলকধাঁধায়,
কবিতারা হয়ে যাচ্ছে দলিত ও স্পন্দিত।


মর্মব্যবচ্ছেদের প্রবলতায় ক্লান্ত সে,
দুর্জনহস্তে পতিতা হয়ে কোমল বনিতা সংশয় মগ্না।
কবির বক্ত্যব্য হয়ে যাচ্ছে ব্যর্থ;
উপলব্ধির অন্বেষণ করাতে চিনি লেপা কিছু রসহীন কহন।  


ষোড়শী কবিতাদের উলঙ্গ করা হচ্ছে প্রতিদিন;
স্ক্যানিং এর অত্যাচারে রসের ও আনন্দের ব্যাখ্যা অসম্পূর্ণ!
ত্তঁচলাকুড়ে স্থান পাচ্ছে ভালো কবিতাগুলো।  
আর্তনাদ করে ওঠে সে হৃদয়ের রক্তক্ষরণে !    


বিশুদ্ধ উপভোগের ক্ষমতা না থাকলে
কবিতার আসল রূপকে গ্রহণ করা যায়না।
খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ব্যাখ্যা করে কবিতা বোঝা যায়না,
কবির অন্তর বাহিরের সবটুকুই গুছিয়ে তোলা থাকে কবিতায়।  


তাই কবিতা পড়ে আনন্দ পেয়ে থাকলেই যথেষ্ট,
কবিতার রস পেতে হলে পন্ডিতের আশ্রয় নিতে হয়না।
কবিতার পোস্টমোর্টেমগুলো দেখে মাঝে মাঝে হই বাকরুদ্ধ !
অতিরিক্ত ছুরি কাঁচি চালিয়ে কবির মেধা ক্রমাগত বিপন্ন!!


আলোচনা :-
কবিতার উদ্দেশ্য কি? পাঠক কে খুশি করা। পড়ে যদি পাঠক আনন্দ পায় সেই যথেষ্ট নয় কি? কবিতাকে প্রধান বোঝা উপভোগের দ্বারা। কারো সেটা হয় কারোর হয়না।  আর এ নিয়ে কোনো তর্ক চলেনা। যে কবিতা গ্রহণ করতে পারে, যার মন ভরে কবিতা পড়ে, আর যার মন ভরে না কবিতা পড়ে তাকে তর্ক করে বোঝানো চলেনা। আর বুঝিয়ে লাভ কি? আমাদের যে এই কবিতা পড়ে ভালো লাগা, যে ভালো লাগায় আমরা রাতের পর রাত কবিতা পড়ে কাটাতে পারি, যে ভালো লাগা মনের প্রধান আশ্রয়, সে নির্বোধের উপভোগ,মূল্যহীন,যদি না কবির বক্তব্যই না বুঝতে পারি।কবির বক্তব্যের চেয়ে পাঠকের মনের ওপর সে কতটা রূপ নিতে পারে সেটাই আসল। যে সমস্ত আলোচক খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করতে চান কবিতার, তাদের বলি যে কবিতাকে বুঝতে হলে তার সমগ্র রূপকে গ্রহণ করবার, ভালো লাগার, বিশুদ্ধ উপভোগের ক্ষমতা থাকা চাই। মর্মব্যবচ্ছেদ যত প্রবল হয়ে ওঠে কবিতা কিন্তু ততই বার্থ হয়ে যায়। কবির প্রত্যেকটি কথা যদি আলোচক খুঁটিয়ে দেখে, তার গূঢ় তাৎপর্য্য কি? কবির নিজের কাছে কবিতার নিজের ব্যাখ্যা আছে। কবি যা বলেন তা কবিতাতে আছে। কি দরকার সেই কবিতার পোস্ট মর্টেম করে? কবিতা যদি ভালো কবিতা হয় তাহলে সে নিজে থেকেই সম্পূর্ণতা লাভ করে। টিকা লেখবার কোনো দরকার হয়না। কবিতাতেই থাকে ব্যাখ্যা, রসের ব্যাখ্যা,আনন্দের ব্যাখ্যা । তাকে গ্রহণ করার জন্যে স্ক্যান করার দরকার নেই।  তবে হ্যাঁ, সমালোচনার মূল্য আছে বৈকি? নিশ্চয় আছে। কিন্তু note এর  বা Explanation এর কোনো মূল্য নেই।  যথার্থ সমালোচনা, সেও এক সৃষ্টিকার্য, সেও এক সাহিত্য, তার মূল্য কম নয়।  কিন্তু তাই বলে কবিতার রস পেতে হলে পন্ডিতের কাছে পাঠ নিতে হবে, সে একেবারে ভুল কথা।


উপসংহার:-
আমার এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য, খুব সম্প্রতি এক কবিতা আলোচকের আলোচনা করতে গিয়ে তিনি আলোচনায় না গিয়ে আমার মন্তব্যটি মুছে ফেললেন।তাই অনুরোধ, যারা আলোচনা সভাতে লেখেন, মন্তব্য মুছে না ফেলে খেলোয়াড়ি মনোভাব দেখিয়ে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করে আলোচনাকে সমৃদ্ধ করুন ।


ধন্যবাদ!