মহান কবি 'কবির'
    
ছয়শ বছর আগে কবিরের জন্ম 1398 খ্রিস্টাব্দে ভারতে। তিনি 120 বছর বেঁচে ছিলেন। এই সময়টিতে  ভারতে ভক্তি আন্দোলনের শুরু বলা হয়। তিনি ছিলেন বয়নশিল্পী অর্থাৎ তাঁতী। কবীর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবিদের মধ্যে স্থান পায়। কবিরের 500 শব্দের উপর পবিত্র কোরান  শরীফ রচিত হয়েছে।  বিশেষ করে শিখ সম্প্রদায় এবং অন্যান্য যারা পবিত্র গ্রন্থের অনুসরণ করে, তারা কবীরকে একই শ্রদ্ধার মধ্যে অন্য দশটি গুরু হিসাবে ধারণ করে।কবির খোলাখুলিভাবে সকল ধর্মের সমালোচনা করেন এবং ভারতীয় দর্শনকে একটি নতুন দিক নির্দেশনা দেন। কবীরের অর্থ হলো গুরুর অনুগ্রহ। সারা পৃথিবীতে তিনি সম্মানিত হন। আমি ব্যক্তিগতভাবে কবিরের দুলাইনের (দোহা) পড়ে অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছি ।কবীরের কবিতার আরেকটি সৌন্দর্য হল যে তিনি আমাদের দৈনিক জীবন ঘিরে  পরিস্থিতিতে তুলে ধরেছেন।
উদাহরণ :-


Looking at the grinding stones, Kabir laments
In the duel of wheels, Nothing stays intact.


আমার অনুবাদ..................
পিষ্টকারী যাঁতার মাঝে তাকিয়ে কবি বিলাপ করছেন
চাকার দ্বৈতের মাঝখানে ,কিছুই অক্ষত থাকে না।


সেইসময়ে ধর্মান্ধতা ও জাতিভেদপ্রথার কঠোরতার বিরুদ্ধে, ইসলামের আগমনের মধ্যযুগে তাদের পরোক্ষ প্রভাবে যে এক ভক্তিবাদী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, কবির ছিলেন তাদের অন্যতম।ইতিহাসে 'ভক্ত কবির' নামে
খ্যাত। তিনি যদিও ছিলেন মুসলমান, কিন্তু তিনি কোনো প্রথিষ্ঠানিক ধর্মে বিশ্বাস করতেন না। তাঁর মতে ঈশ্বর এক, এবং তাকে আমরা রাম বা রহিম যে নামেই ডাকিনা কেন। তাঁর আসল নাম ছিল 'শেখ কবির উদ্দিন মোমিন আনসারী' । হিন্দি ভাষায় তাঁর 'দোহা'( দু লাইনের কবিতা) আজ ও অত্যন্ত জনপ্রিয়।


আচার্য ক্ষিতিমোহন সেন তাঁর কিছু দোহা বাংলায় অনুবাদ করেন :-


১) না দেখি কিছু ভাব ভজনে,না দেখি কিছু পুঁথিতে
    কহে কবির ,শুনো হে ভাই যা আছে সব রুটিতে


২) কোথায় খোঁজো আমায় হে বান্দা, আমিতো তোমারি পাশে,
     নই দেবালয়ে , কিবা মসজিদে, নই আমি কৈলাশে।


৩)  উপরে তো আর রহেনা পানি, নীচেই পায় সে ঠাই,
      আমি তো আছি সবার নীচে, তাই সত্যকে পাই ।


৪) মসজিদে যদি থাকেন খোদা, বাকী জগৎটা কার,
     মূর্তিতে যদি রামের আবাস, তবে বাহিরে কি আছে তার ।


৫) না আমি হিন্দু, নয় তো মুসলমান,
    ষড়দর্শনও নয় -আসল তো ভগবান।


সবাইকে জানাই আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা।