বড় আদরের মেয়ে সে নাম তার মিনি,
দারুন সে কথা বলে মিষ্টি মুখ খানি।
বকুনি খায় সারাদিন তার মা'র কাছে,
কথা বলা থামেনা তার সবাই ভালবাসে।
বলল সে একদিন বসে বাবার কোলে,
‘দরওয়ান কিছু জানেনা কাককে কৌয়া বলে’।
হেঁসে বলল বাবা তার ভারী মুখ দেখে,
‘আচ্ছা আমি খুব করে বকে দেব তাকে’।
ভোলা বলছিল ‘জানো বাবা কি করে বৃষ্টি পরে,
হাতি নাকি শুঁড় দিয়ে বৃষ্টির জল ফেলে’।|
হঠাত মিনি ছুটল জানলার দিকে,
ডাক দিল জোরে জোরে 'কাবুলিওয়ালা' কে।
কাবুলিওয়ালা হাঁসিয়া আসিল তার কাছে,
ছুটিয়া পালালো সে তার ঝুলিটি দেখে।
ভাবলো সে না জানি কি আছে ঝুলির ভেতরে,
হয়ত বা ছেলে ধরে তার মধ্যে পোরে।
কাবুলিওয়ালা শুধাল 'তোমার লড়কি কোথায়'?
অনর্থক ভয় পায় ভেবে বাবা নিয়ে এলো সেথায়।
মিনি দাঁড়ালো এসে তার বাবার কোল ঘেষে,
নজর তার ঝুলির দিকে তাকায় সেই দিকে।
এমনি ভাবে হলো তার প্রথম পরিচয়,
কাবুলিওয়ালা'র সঙ্গে হলো প্রীতি বিনিময়।
বন্ধু হলো দুজনেতে  ক্রমে দিনে দিনে ,
কাটেনাকো কোনদিন দেখা না করে বিনে।
নাম তার রহমত বড় ভালবাসে যারে,
পেস্তা বাদাম দিয়ে জয় করলো তারে।
ধীরে ধীরে মিনির ভয় গেল কেটে,
কাছাকাছি এলো তারা সেইদিন থেকে।
মিনিকে খালি বলত সে 'যেওনা তোমি সসুরবাড়ি',
জানত না মিনি তখন কি হয় শশুরবাড়ি |
উল্টে শুধালো সে 'তুমি শশুরবাড়ি যাবে?
কাবুলিওয়ালা বলল তারে 'আমি সসুরকে মারবে '।
মিনি পেল মজা ভারী সেই কথা শুনে ,
হাঁসিয়া উঠলো সে খুব জোরে জোরে।
কোনো এক অপরাধে রহমতের হলো কারা,
দিনরাত কাঁদে মিনি ভেবে হলো সারা।
ক্রমে ক্রমে মিনি বড় হতে লাগলো,
কোনো এক শুভদিনে বিয়ে ঠিক হলো।
রহমত  ছাড়া পেয়ে এলো মিনির খোঁজে,
শুনলো বিয়ের কথা, জল এলো তার চোখে।
কিশমিশ পেস্তা সব এনেছিল সঙ্গে করে,
বাবার হাতে তুলে দিল সেসব মিনির তরে।
দাম দিতে গেলে বাবার হাত চেপে ধরে,
বলে 'তোমার মত একটি মেয়ে আছে আমার ঘরে'।
বলল বাবা 'ফিরে যাও রহমত তোমার মেয়ের কাছে',
'তোমাদের মিলন সুখে, মিনির কল্যাণ হবে'।
জোর করে কিছু টাকা দিল তার হাতে,
উত্সব ভরে গেল যেন মঙ্গল আলোকে।