অগ্নিশিখা জ্বলিতিছে অতি উজ্জ্বল ভাবে
দেখিয়া কাষ্ঠ তাহা,নাহি পারে সহিতে।
বিনয়ে কাষ্ঠ যাই শিখারও কাছে,
বুঝিয়া শিখা তাহা মনে মনে হাসে।
কাষ্ঠ বলে,“ওগো শিখা শুনিতে কি পাও?
উজ্জ্বল রূপ চাই গো আমার উপায় বলে দাও।”
শিখা বলে, “শোন কাষ্ঠ দিয়া তব মন,
হেন রূপ চাইলে হও আমাতে দহন।”
পুড়িতে পুড়িতে কাষ্ঠ দেখে আপনার
শিখা হইতে হয়েছে সে আরো উজ্জ্বলতর।
ক্ষণকাল পরে শিখা বলে, “কাষ্ঠ ভাই,
তোমাকে পোড়ানো হলো আমি এখন যাই।”
বোকা কাষ্ঠ বলে তখন, “কেন যেতে চাও?
তোমা হতে এখন আমি কম উজ্জ্বল নও।
পুড়িলাম এতক্ষণ আমি, তুমিও পুড়ে যাও।”
মায়াবী শিখা তখন বলে হেসে হেসে,
“পুড়িতে এসেছে তুমি আমি পোড়াতে।
পোড়াবার ক্ষমতা তুমি পেলে কোথা থেকে?
পোড়াতে পারো যদি পুড়িব আমি,
সম্মুখে দাঁড়িয়ে তোমায় এ কথা দিলাম আমি।”
নিজেকে যখন দেখে কাষ্ঠ দীপ্ত শিখাহীন
বুঝিতে পারে বর্ণ্ তাহার হয়েছে বিলীন।
কূলমান বাড়াইতে আজ হয়েছে কূলহীন।
কাষ্ঠ রূপ পুরুষেরা, শিখা রূপ নারীর
রূপ-রসে মত্ত থাকে আলোক-তিমির।
দৃষ্টি থকিতেও অন্ধ পুরুষ, নারীরও প্রেমে
প্রেম হারালে পারে না তাই নিজেকে চিনতে।