আমার প্রাণের ঠাকুর
(প্রথম খণ্ড)


শ্রী শ্রী ঠাকুরের মহান আদর্শের ভাবধারায় রচিত
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর ধর্মীয় কবিতাগুচ্ছ


দয়াল ঠাকুর এলেন ধরায়
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


ঈশ্বর তাঁর মনের মতো করে, সর্বাঙ্গীণ রূপ দিয়েছেন তাঁরই গড়া এই জগৎকে; আর গড়েছেন প্রেম উজাড় করে তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি এই মানবকে, দিয়েছেন অনন্ত রূপ, যৌবন আর সম্পদ। মানুষের প্রতি তাঁর বার্তা—বেঁচে থাকো, উপভোগ কর ও অনন্ত জীবনের অধিকারী হও।


ঈশ্বরেরই ব্যক্ত রূপ পরম প্রেমময় শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র; সেই অনন্ত ভোগের ব্যাপারটা জানিয়ে দিলেন এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়ে। তাঁর হৃদয়ের একান্ত কামনা আমরা বেঁচে থাকি, বেড়ে উঠি। ভোগ-উপভোগ যা কিছু তা বেঁচে থেকেই করা সম্ভব।


তাঁর মুখনিঃসৃত বাণী
‘মরো না মেরো না, পারতো মৃত্যুকে অবলুপ্ত কর।’
‘অন্যে বাঁচায় নিজে থাকে, ধর্ম বলে জানিস তাকে।’
‘ধর্মে সবাই বাঁচে-বাড়ে, সম্প্রদায়টা ধর্ম না রে।’


এই পৃথিবীর সর্বত্র নানা বর্ণের, নানা সংস্কারের কত বৈচিত্র্যপূর্ণ মানুষের বাস। খুবই আনন্দ ও উপভোগের বিষয়, সবাই বাঁচতে চায় নিজের মতো করে। অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার, আজ এই সভ্য সমাজে সবচেয়ে বড় সংকট হলো শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে বেঁচে থাকা। মানুষের এই বিচ্ছিন্ন জীবন ও বিরোধ—এই নিরন্তর আনন্দ উপভোগের পথে সব সময় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারও কারও জীবনে এই বিচ্ছিন্নতা সর্বগ্রাসী দানবের মতো সব আনন্দকে গোগ্রাসে গিলে ফেলে। মানুষ বিদগ্ধ অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। আর এই বেঁচে থাকার নৈরাশ্য ও হাহাকার আমরা প্রতিনিয়ত অবলোকন করছি।
এমতাবস্থায় আমরা সকলেই খুঁজে বেড়াই একটা আশ্রয়, একটি কাঁধ, একটি কোল। মানবের আকুল ক্রন্দন ও প্রার্থনায়, আবির্ভূত হলেন পরমপিতা পরম প্রেমময় শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র। মানুষ যখন তাঁর আশ্রয় গ্রহণ করে তখন সকল দুঃখের মাঝেও পরম আনন্দ, পরম শান্তি উপভোগ করে। ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র নিয়ে এলেন অতি সুন্দর, সরল, মনোগ্রাহী এই প্রথা; যাকে বলা হয় যজন-যাজন-ইষ্ট ভৃতি। এই তিনের পরিপালনে মানুষের রক্ষা পাওয়া সুনিশ্চিত করে দিয়েছেন তিনি।


জীবন গঠনে সর্বপ্রথম এবং প্রধান উপাদানই হলো তাঁর দেওয়া সৎ দীক্ষা, অর্থাৎ সৎ নাম গ্রহণ ও মনন। জীবনী শক্তি বৃদ্ধির একমাত্র উপায়ই হলো এই সৎ নাম। নিজস্ব যে সংস্কার বা সম্প্রদায়গত আচরণবিধি আছে, তা যথাযথ অটুট রেখে, ওই সংস্কার বা সম্প্রদায়গত আচরণ আরও শক্তিশালী করে তুলতে এই সৎ নাম অপরিহার্য।


তাই ঠাকুর বললেন- “তোমরা সৎ নাম গ্রহণ কর, সৎ নাম মনন কর। আমি নিশ্চিত করে বলছি- তোমার উন্নয়ণের জন্য ভাবতে হবে না”।


আমরা একজন সংসারীকে যত দ্রুত আপন করতে পারি, একজন জটাজুট গেরুয়াধারী সন্নাসীকে পারিবারিকভাবে ততটা আপন করতে দ্বিধাগ্রস্ত হই। পরম প্রেমময় শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র তা বুঝেই এবার পরিবার গড়ে দিয়ে গেলেন। রেখে গেলেন পরম্পরায় পরম পূজ্যপাদ শ্রী শ্রী বড় দাকে, পরম পূজ্যপাদ আচার্য্যদেব শ্রী শ্রী দাদাকে; শুধু তাই নয় তিনি গড়ে দিয়ে গেলেন আচার্য পরম্পরা, যা চলতে থাকবে যুগ যুগ ধরে অনন্ত কাল মনুষ্যত্বের পূর্ণ বিকাশার্থে।


তিনি বাণী দিয়ে গেলেন:


‘দীক্ষা নিয়ে শিক্ষা ধরিস
আচার্যকে করে সার
আচরণই বোধ চয়নে
জ্ঞানের সাগর হ’ না পার।’


জগতের প্রতিটি মানুষ তার যাবতীয় সুখ-দুঃখ পরম পূজ্যপাদ আচার্যদেবের চরণে নিবেদন করে সান্ত্বনা ও সমাধান পেয়ে চলেছে। কারণ একটাই আমার পরিবারের অভিভাবক যে তিনি; পরম পূজ্যপাদ শ্রী শ্রী দাদা! তাই আজও নিত্য লাখ লাখ মানুষ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের, বিভিন্ন সংস্কারের, তাঁর শ্রীচরণে আশ্রয় পেয়ে ধন্য হচ্ছেন। আজ পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ এই সৎ নামে দীক্ষিত হয়েছেন। দীক্ষা গ্রহণের এই ধারা অব্যাহত আছে, থাকবে যুগ যুগ ধরে।


তিনি জগতের বুকে হাজার-হাজার শ্রীমন্দির, কেন্দ্র গড়ে তুলে পরম প্রেমময় শ্রী শ্রী ঠাকুরের ভাবধারা প্রতিষ্ঠিত করছেন। দেওঘর ধামে পরম দয়ালের মূল আশ্রমে বা লীলাভূমিতে জগতের মানুষের ঢল নিরন্তর বয়ে চলেছে। আর তারা পেয়ে চলেছে আচার্য দেবের আদর্শ নেতাদের ঈপ্সিত একান্ত হৃদয়ের গহিনের চাওয়া শ্রী শ্রী ঠাকুরের অমীয় পরশ।


পরম দয়াল শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের মুখনিঃসৃত যে হাজার হাজার বাণী ও প্রশ্ন-উত্তর যা কিনা মনুষ্য জীবনে অমৃততুল্য, মাতৃদুগ্ধের ন্যায় অপরিহার্য। তাঁর একেকটি বাণী এককটি মুমূর্ষু মানবের কাছে জীবনদায়ী। ভাষা দিয়ে পরম প্রেমময় শ্রী শ্রী ঠাকুরের প্রকাশ ঘটানো কখনো সম্ভব না।


জানালার ছিদ্র দিয়ে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ যেমন সম্ভব নয়। পরম দয়াল শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র, আচার্য দেব শ্রী শ্রী দাদার মধ্যে কতটা প্রকট তা, শ্রী শ্রী ঠাকুরের বাণীতে পাই:
‘দেবদেবতা হাজার ধরিস্
আচার্য যার ইষ্ট নয়
স্পষ্টতর বুঝে রাখিস্
জীবন চলনায় নেহাৎ ভয়।’


আসুন, আমরা সকলেই শ্রী শ্রী ঠাকুরের নির্দেশিত চলার পথে এগিয়ে যাই আর আমাদের এই তুচ্ছ জীবনকে ধন্য করে তুলি।
শ্রী শ্রী ঠাকুরের মহান আদর্শের ভাবধারায় কবিতাগুলি রচিত হয়েছে। সত্সঙ্গীদের প্রতিদিন অন্ততঃ একটি করে পাঠ করা আবশ্যক। কবিতাগুলি ইতিপূর্বে কবি ও কবিতা, বাংলা কবিতা আসরে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তার একত্রীকরণ করে আমার প্রাণের ঠাকুর (প্রথম খণ্ড) প্রকাশ করা হোল।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু!


বিনীত কবি
নারায়না বিহার, নতুন দিল্লি-110028


সুচীপত্র


প্রণাম তোমায় হে ঠাকুর
হে প্রিয় পরম প্রভু
মানব প্রেমিক তুমি যে দেবতা
প্রাণের ঠাকুর হৃদয়ের দেবতা
যুগ-পুরুষোত্তম যুগাবতার
যুগপুরুষোত্তম দয়াল ঠাকুর
প্রণমি তোমায় দয়াল ঠাকুর
দয়াল ঠাকুর শ্রী অনুকূল
দয়াল প্রভু
দয়াল ঠাকুর
দয়াল ঠাকুর শ্রী অনুকূল
প্রেমের ঠাকুর এলেন ধরায়


প্রণাম তোমায় হে ঠাকুর
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
প্রণাম তোমায় হে ঠাকুর
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল,
চরণপূজা করবো তোমার
এনেছি পূজার ফুল।
তুমি সৃষ্টি, তুমি স্থিতি,
বন্দনা করি নিতিনিতি,
তুমি হে প্রলয়ের গতি
তুমি অকূলের কূল।
প্রণাম তোমায় হে ঠাকুর
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল।
চরণপূজা করবো তোমার
এনেছি পূজার ফুল।
তুমি রাম তুমি কৃষ্ণ
যুগাবতার শ্রীরামকৃষ্ণ
তুমি যীশু, গৌতমবুদ্ধ,
তুমি প্রভু আল্লা রসুল।
প্রণাম তোমায় হে ঠাকুর
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল।
চরণপূজা করবো তোমার
এনেছি পূজার ফুল।
তুমি নররূপে ভগবান,
করিলে সত্দীক্ষা দান,
তুমিই যীশু, তুমি রাম,
অখিল জগতের মূল।
প্রণাম তোমায় হে ঠাকুর
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল।
চরণপূজা করবো তোমার
এনেছি পূজার ফুল।
তুমি যে জগতের সার,
প্রণাম তোমায় বারবার,
দীক্ষা নিলে ভাঙে সবার
জীবনে চলার ভূল।
প্রণাম তোমায় হে ঠাকুর
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল।
চরণপূজা করবো তোমার
এনেছি পূজার ফুল।


হে প্রিয়পরম প্রভু
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


হে প্রিয়পরম প্রভু! তুমি ভগবান,
ভক্তিঅর্ঘ দিয়ে প্রভু জানাই প্রণাম।
তুমি রাম তুমি কৃষ্ণ জগতের সার,
প্রণাম জানাই প্রভু চরণে তোমার।


মানুষেরে ভালবেসে করিলে আপন,
পরম কারণ তুমি, তুমি নারায়ণ।
তুমি যে পরমপিতা পূজ্য সবাকার,
প্রণাম জানাই প্রভু চরণে তোমার।


গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু তুমি ভগবান,
তোমারে জানাই প্রভু সতত প্রণাম।
তুমি দেব তুমি গুরু হে প্রভু আমার!
প্রণাম জানাই প্রভু চরণে তোমার।


জীবনে চলার পথে তুমি ধ্রুবতারা,
চিরসুখী সেইজন দীক্ষা লভে যারা।
হে পরমপিতা তব মহিমা অপার,
প্রণাম জানাই প্রভু চরণে তোমার।


রাতুল চরণে তব থাকে যেন মতি,
প্রণাম জানাই প্রভু আমি তব প্রতি।
জ্বালাও জ্ঞানের দীপ নাশিয়া আঁধার,
প্রণাম জানাই প্রভু চরণে তোমার।


তুমি ধ্যান, তুমি জ্ঞান জগতের গুরু,
তোমার আশীষে মোর পথ চলা শুরু।
জপ নাম অবিরাম, নাম কর সার,
প্রণাম জানাই প্রভু চরণে তোমার।


মানব প্রেমিক তুমি যে দেবতা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


মানব প্রেমিক তুমি যে দেবতা
তুমি সর্বশক্তিমান।
জাগ্রত ভগবান সদা জাগ্রত ভগবান।


আপনি আচরি শিখাইলে ধর্ম
নাম তব দেশে দেশে,
সত্দীক্ষা দিয়ে জাগালে চেতনা
মানুষেরে ভালবেসে।


সত্যে শ্রীহরি ত্রেতায় রাম
যুগে যুগে অধিষ্ঠান।
মানব প্রেমিক তুমি যে দেবতা
তুমি সর্বশক্তিমান।
জাগ্রত ভগবান সদা জাগ্রত ভগবান।


যুগে যুগে তুমি এসেছো ধরায়
মানবে করিতে ত্রাণ,
তব নাম লয়ে সুখী হয় জীবন
পাপী পায় পরিত্রাণ।
মানব প্রেমিক তুমি যে দেবতা
তুমি সর্বশক্তিমান।
জাগ্রত ভগবান সদা জাগ্রত ভগবান।


সত্দীক্ষা দিয়ে সবাকারে তুমি
দেখাইলে নতুন পথ,
অজ্ঞান নাশি জ্ঞানের আলোকে
চলে অগ্রগতির রথ।
বিশ্বপ্রেমিক তুমি যে ঠাকুর
তুমি যে আমার প্রাণ,
অজ্ঞান অন্ধকার ঘুচায়ে প্রভু
জ্ঞান অঞ্জন কর দান।
মানব প্রেমিক তুমি যে দেবতা
তুমি সর্বশক্তিমান।
জাগ্রত ভগবান সদা জাগ্রত ভগবান।


প্রাণের ঠাকুর হৃদয়ের দেবতা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


প্রাণের ঠাকুর হৃদয়ের দেবতা
প্রিয় তুমি সবাকার,
জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালাও প্রভু গো
নাশি অজ্ঞান আঁধার।


হে পরমপিতা তুমি প্রেমময়,
শ্রীচরণে তব যেন মতি রয়,
প্রেমের ঠাকুর লহ গো প্রণাম
আরাধ্য প্রভু আমার,


প্রাণের ঠাকুর হৃদয়ের দেবতা
প্রিয় তুমি সবাকার।
হিমায়েতপুর তব জন্মভূমি,
দেওঘরেতে বিরাজিছ তুমি,


রচিলে আশ্রম দেওঘর তপোবন
অপূর্ব সৃষ্টি তোমার,
প্রাণের ঠাকুর হৃদয়ের দেবতা
প্রিয় তুমি সবাকার।


প্রভাতে শুনি শঙ্খ-ধ্বনি,
প্রার্থনা গীতি নিত্য শুনি,


দূর থেকে আসে ভক্তজন সবে
বসে আনন্দ-বাজার,
প্রাণের ঠাকুর হৃদয়ের দেবতা
প্রিয় তুমি সবাকার।


তুমি প্রভু ওগো পরম গুরু,
তবনাম নিয়ে পথচলা শুরু,


বিপদে আপদে হাত ধরো প্রভু
বিপদে করো উদ্ধার,
প্রাণের ঠাকুর হৃদয়ের দেবতা
প্রিয় তুমি সবাকার।


যজন যাজন আর ইষ্টভৃতি,
করে যেইজন নিতি নিতি,


সকাল সন্ধ্যায়, করে যে প্রার্থনা
সুখী হয় তার সংসার,
প্রাণের ঠাকুর হৃদয়ের দেবতা
প্রিয় তুমি সবাকার।


যুগ-পুরুষোত্তম যুগাবতার
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


যুগ-পুরুষোত্তম তুমি যুগ অবতার,
নমামি হে প্রভু আমি চরণে তোমার।
তুমি রাম তুমি কৃষ্ণ তুমি প্রেমময়,
পরম দয়াল তুমি, হে করুণাময়।


জীবনে চলার পথে তুমি যে সহায়,
বহু ভাগ্যফলে প্রভু পেয়েছি তোমায়।
সত্যের শ্রীহরি তুমি ত্রেতাযুগে রাম,
কলিযুগে হল তব. শ্রীঅনুকূল নাম।


সত্দীক্ষা দিয়ে তুমি দেখাইলে পথ,
তব নামে তব ধ্যানে পূর্ণ মনোরথ।
মানুষ আপন তব টাকা হল পর,
শেখালে মানব সেবা কর নিরন্তর।


হে পরমপিতা তুমি আরাধ্য আমার,
তব পদে মতি যেন থাকে অনিবার।
যুগ-পুরুষোত্তম তুমি যুগ অবতার,
নমামি হে প্রভু আমি চরণে তোমার।


যুগপুরুষোত্তম দয়াল ঠাকুর
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
যুগপুরুষোত্তম দয়াল ঠাকুর
তুমি প্রভু নারায়ণ,
ভক্তি অর্ঘ দিয়ে প্রভু তব
পূজিব রাঙা চরণ।
তোমার দয়ায় সকলি পেয়েছি
তুমি প্রভু জীবন-স্বামী,
শত জনমের বহু ভাগ্যফলে
তোমারে পেয়েছি আমি।
আঁধার ভরা জীবনে আমার
পেয়েছি সুখের আলো,
তুমি যে আমার পরম আপন
তোমারে বেসেছি ভালো।
অন্নহীনে অন্ন দাও প্রভু গো
দৃষ্টি-হীনে দাও দৃষ্টি,
স্থাবর-জঙ্গম, পর্বত-কন্দর
সকলি তোমার সৃষ্টি।
ফলে ও ফুলে তুমি বিরাজিছ
সকলি তোমার দান,
নররূপে তুমি এলে নারায়ণ
তোমারে জানাই প্রণাম।
চন্দ্র সূর্য গ্রহ আকাশের তারা
তোমারেই বন্দনা করে,
সত্দীক্ষা দিয়ে শেখালে মানবে
মহামানবের রূপ ধরে।


প্রণমি তোমায় দয়াল ঠাকুর
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


প্রণমি তোমায় দয়াল ঠাকুর
আমায় কর তুমি পার,
যুগে যুগে তুমি এসেছো ধরাতে
মানবে করিতে উদ্ধার।


আসিলে তুমি হে জীবনস্বামী,
বন্দনা তব গাই প্রভুর আমি,
সত্য যুগে তুমি হলে নারায়ণ
ত্রেতায় রাম অবতার,
প্রণমি তোমায় দয়াল ঠাকুর
আমায় কর তুমি পার।
যুগে যুগে তুমি………


শ্রীরাম রূপে তুমি অবতরি,
মারিলে দানব রাবণ অরি,
উদ্ধারিতে পাপীতাপী ভবে
দানবে করিলে সংহার।
প্রণমি তোমায় দয়াল ঠাকুর
আমায় কর তুমি পার।
যুগে যুগে তুমি………


দ্বাপরেতে শ্রীকৃষ্ণ অবতার
করিলে তুমি কংস সংহার
যুগে যুগে এসেছো ধরায়
তুলে নিতে পাপের ভার।
প্রণমি তোমায় দয়াল ঠাকুর
আমায় কর তুমি পার।
যুগে যুগে তুমি………


কলিযুগে শ্রী অনুকূল নামে
জন্মিলে হিমায়েতপুর গ্রামে
তোমার নামে তোমার গানে
ডাকি তোমায় বারে বার।
প্রণমি তোমায় দয়াল ঠাকুর
আমায় কর তুমি পার।
যুগে যুগে তুমি এসেছো ধরাতে
মানবে করিতে উদ্ধার।


দয়াল ঠাকুর শ্রী অনুকূল
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


দয়াল ঠাকুর শ্রী অনুকূল
সদা বিরাজমান তিনি,
মানুষ আপন টাকা পর
সবারে শেখালেন যিনি।
কলিতে নাম ধ্যান জপ
করো তুমি অবিরাম,
নামে আছে সুখ ও শান্তি
পাবে তুমি মোক্ষধাম।
মধুর নাম ধ্যান অবিরত
জপ করে যেইজন,
রোগ সন্তাপ দূরেতে যায়
করে বৈকুণ্ঠে গমন।
কলিতে শ্রীঅনুকূল ঠাকুর
এসেছিলেন ধরায়।
সত মন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে সবে
পাপী পরিত্রাণ পায়।
প্রেমের ঠাকুর শ্রী অনুকূল
প্রণাম আমার নিও,
ঠাকুর তোমার চরণযুগলে
একটুকু ঠাঁই দিও।


দয়াল প্রভু
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


দয়াল প্রভু পুরুষোত্তম
ঠাকুর শ্রীঅনুকূল,
তোমার নামে সবার ভাঙে
জীবন চলার ভুল।


তব আশীষ নিয়ে সবাই
জীবন পথে চলে,
তোমার নামে তোমার গানে
তোমার কথা বলে।


তুমি যে প্রভু পরম গুরু
আমার ধ্রুবতারা,
তোমার নামে বিভোর আমি
হই যে দিশাহারা।


জীবন পথে চলতে গিয়ে
তোমায় পেলাম আমি,
ইষ্টগুরু তুমি পরম পিতা
আমার জীবন স্বামী।


তব চরণ অন্তিমে যেন
প্রভু যেন আমি পাই।
তাইতো প্রভু সারা জীবন
তব নাম আমি গাই।


দয়াল ঠাকুর
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


দয়াল তোমার শ্রীচরণে
ঠাঁই যেন পাই আমি,
তুমি আমার পরম আপন
এই তো শুধু জানি।


তব আশীষ মাথায় নিয়ে
আমি চলি সংসার পথে,
রক্ষা করেন দয়াল প্রভু
আমার আপদে বিপদে।


পরম প্রেমময় পরম দয়াল
শ্রী শ্রী অনুকূল ঠাকুর,
তব কৃপায় ধন্য যে সবাই
সবার দৈন্য হয় দূর।


তুমি আমার প্রাণের ঠাকুর
তোমার চলা,তোমার বলা,
তোমার আশীষ মাথায় নিয়ে
মোর সংসার পথে চলা।


তব আগমনে ধন্য যে হল
বাংলা ও বিহার ভূমি,
জীবন মন্ত্রে মানব যন্ত্ররে
চালালে হে প্রভু তুমি।


সত্দীক্ষা নিয়ে তব নামগানে
প্রাণে প্রাণে জাগে সাড়া,
শেখালে মানবে ত্যাগের মহিমা
জীবন পথের বাঁচা-বাড়া।


তোমার নামে তোমার গানে
পুলকিত হয় তনু মন,
হে প্রভু মোর জীবনের সার
তুমি যে অমূল্য রতন।


তোমায় পেয়ে ধন্য হল
আমার এ জীবন,
পাই যেন অন্তিমে প্রভু
তব রাঙা শ্রীচরণ।


প্রেমের ঠাকুর এলেন ধরায়
(ধর্মীয় গীতি কবিতা)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


প্রেমের ঠাকুর এলেন ধরায় শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি ।
পিতা হলেন যাঁর শিবচন্দ্র মাতা হলেন মনোমোহিনী।।


তিরিশে ভাদ্র পুণ্য শুক্রবার,
এলেন ঠাকুর জগৎ মাঝার,
প্রণাম জানাই তাঁরে বারবার,
ধন্য এদেশ বাংলার ভূমি।


… … শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি।
প্রেমের ঠাকুর এলেন ধরায় শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি ।
পিতা হলেন যাঁর শিবচন্দ্র মাতা হলেন মনোমোহিনী।।


পাবনাজেলার হিমায়েতপুরে,
এলেন ঠাকুর এ ধরার পরে,
পরে এলেন শ্রী দেওঘরে,
ধন্য হলো যে বিহার ভূমি ।


… … শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি।
প্রেমের ঠাকুর এলেন ধরায় শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি।
পিতা হলেন যাঁর শিবচন্দ্র মাতা হলেন মনোমোহিনী।।


সৎদীক্ষার প্লাবন এলো,
আঁধার যত মুছে গেলো,
সবার জীবন ধন্য হলো,
পেল খুঁজে সোনার খনি।


… … শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি।
প্রেমের ঠাকুর এলেন ধরায় শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি।
পিতা হলেন যাঁর শিবচন্দ্র মাতা হলেন মনোমোহিনী।।


শ্রী লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী বলে,
জীবনতরী ভিড়লো কূলে,
অন্তিমেতে জয়গুরু বলে,
শুনি যেন মধুর বংশীধ্বনি।


… … শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি।
প্রেমের ঠাকুর এলেন ধরায় শাঁখ বাজাও, দাও উলুধ্বনি।
পিতা হলেন যাঁর শিবচন্দ্র মাতা হলেন মনোমোহিনী।।
বন্দে পুরুষোত্তমম । যুগ পুরুযোত্তম শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের জয়।


যুগ পুরুষোত্তম শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের জীবনী


শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র (১৪ই সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮- ২৬শে জানুয়ারি, ১৯৬৯) বাঙালি ধর্ম সংস্কারক। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ নামক সংগঠনের প্রবর্তক। তিনি ব্রিটিশ ভারতের বঙ্গ প্রদেশের পাবনা জেলার হিমায়তপুরে জন্মগ্রহণ করেন, যা বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত। ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে দেহত্যাগ করেন।


অনুকূলচন্দ্রের পিতা শিবচন্দ্র ছিলেন নিষ্ঠাবান ব্রাক্ষ্মণ। তার জননী মনোমোহিনী দেবী ছিলেন একজন সতীসাধ্বী রমনী। তিনি উত্তর ভারতের যোগীপুরুষ শ্রী শ্রী হুজুর মহারাজের শিষ্য। ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র মায়ের কাছেই দীক্ষা গ্রহণ করেন।


ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র হিন্দুধর্ম তথা হিন্দু সমাজের একজন মহাপুরুষ, বিশ্ব মানবতাবাদী এবং পরম কৃষ্ণ ভক্ত।আনুমানিক তার ১০০ টির মত গ্রন্থ রয়েছে। যে গুলো ৮০ ভাগই নীতিশিক্ষা। কি ভাবে মানুষ ভাল থাকবে, সুস্থ থাকবে, শান্তিপূর্ণ ভাবে সবাই মিলে মিশে থাকবে, সেই শিক্ষাই দেওয়া হয়েছে।


পৃথিবীতে বহু মানবতাবাদী রয়েছে, তবে তার মত শ্রেষ্ঠ আর কেউ নেই,তিনি সকল মানুষকে নিয়েই ভাবতেন, সকল মানুষেরই পাশে দাড়াতেন।
জয়গুরু।